দীর্ঘ দুই বছর পর স্কুল ও মাদরাসাগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিন্তু রাজশাহীর মসজিদ মিশন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হয়নি প্রতিষ্ঠানটিতে।
পাঁচ ফুটের কম দৈর্ঘ্যের একজন শিক্ষার্থী এবং ৫ থেকে ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের বেঞ্চে দুইজন শিক্ষার্থী বাসনোর নির্দেশনা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা এক বেঞ্চে তিনজন করে বসে পরীক্ষা দিয়েছেন।যদিও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘হঠাৎ শিক্ষার্থী চলে আসায় তারা জায়গা দিতে পারেননি।’ পরবর্তী পরীক্ষা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসন বিন্যাস সাজানো হবে বলেও দাবি কর্তৃপক্ষের।
বুধবার সকালে প্রতিষ্ঠানটিতে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দৈনিক শিক্ষাডটকমকে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক পরীক্ষার বেশ কয়েকটি ছবি পাঠায় সূত্র। সূত্র জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে বুধবার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। পরীক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসে পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষার হলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই ছিল না।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের হাতে থাকা একাধিক ছবিতে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানের আলাদা আলাদা রুমে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে পরীক্ষা দিচ্ছে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর মাস্ক থাকলেও কয়েকজন শিক্ষার্থীর মুখে মাস্ক ছিল না।
এ বিষয়ে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় মসজিদ মিশনের সাধারণ সম্পাদক ইয়াহিহা বশিরাবাদের সাথে। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বুধবার বার্ষিক পরীক্ষা হলেও আমি ওই প্রতিষ্ঠানে যেতে পারিনি। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে, কিন্তু তা কেন নেওয়া হয়নি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা আয়োজন করা উচিত ছিল।’
এদিকে গাদাগাদি করে পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ নূরুজ্জামান খাঁন দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেন, ‘আসলে হঠাৎ অনেক শিক্ষার্থী চলে আসায় আমরা তাদের বসার ব্যবস্থাপনা করতে পারিনি। বছরের শুরুতে ভর্তি হওয়া অনেক শিক্ষার্থী এতদিন ক্লাসে আসেনি। বুধবার বার্ষিক পরীক্ষার খবরে অনেকেই প্রতিষ্ঠানে চলে আসেন। হঠাৎ শিক্ষার্থীরা চলে আসায় এ বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এ শিক্ষার্থীরা যে আসবে তা আমরা বুঝতে পারিনি। অনেক শিক্ষার্থী জানতো না বার্ষিক পরীক্ষা, তারা ক্লাস করতে এসে পরীক্ষায় বসেছেন।’
করোনার সময় ও পরে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করার নির্দেশনা দিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু আপনারা কি শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেন নি-প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, ‘সব শিক্ষার্থীর সাথে আসলে সেইভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে, আমারা আগামীকাল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেবো।’