বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ স্বেচ্ছায় ডেমরার সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মারা গেছেন বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত ৪ নভেম্বর বিকেল থেকে নিখোঁজের পর সেদিন রাত ২ টা ৩৪ মিনিটে ব্রিজের ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে পড়ে তিনি মারা গেছেন বলে তদন্তকারী সংস্থাটি দাবি করছে।
বুধবার রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ব্রিফিংয়ে জানান, ফারদিন নুর পরশ নিহত হওয়ার ঘটনায় র্যাব তার পারিবারিক সুত্র, অধিকতর তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ, সিসিটিভি ফুটেজসহ স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের আলোকে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করে।, গত ৪ নভেম্বর বিকেল ৩টায় ঘটিকায় রাজধানী ডেমরার কোনাপাড়া নিজ বাসা থেকে পরীক্ষার কথা বলে বুয়েটের হলের উদ্দেশে বের হয় ফারদিন। বিকাল আনুমানিক ৫ টায় সে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে তার পরিচিতার সাথে তিনি দেখা করে। সেখান থেকে নীলক্ষেত ও ধানমণ্ডিসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে সাত মসজিদ রোডে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা করে। অতঃপর রাত আনুমানিক ৮টায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে তিনি রিক্সাযোগে রামপুরার উদ্দেশে যান। আনুমানিক রাত পৌনে ১০টায় রামপুরা ব্রিজ এলাকায় তিনি রিক্সা থেকে নেমে যান এবং কিছুক্ষণ রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, পরবর্তীতে তিনি কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড, গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় গমন যান।
তিনি আরও জানান, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায়, রাত ২টায় (সিসিটি ফুটেজ টাইম ২টা ৩ মিনিটে) যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচা থেকে ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায়। রাত আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ্বরোডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যায় ফারদিন। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় যে, রাত ২ টা ২৬ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিনের অবস্থান ছিলো। রাত ২ টা ৩৪ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে আসে ফারদিন। ব্রিজের তারাবো প্রান্ত থেকে সুলতানা কামাল ব্রিজের মাঝখান পর্যন্ত দূরত্ব আনুমানিক ৪০০-৫০০ মিটার। রাত ২ টা ৩৪ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের রেলিং ক্রস করে ফারদিন এবং ব্রিজের ওপর থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেয়। ঝাঁপ দেয়ার পর শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে পড়ে ফারদিন। রাত ২ টা ৩৫ মিনিটে ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। রাত ২ টা ৫১ মিনিটে ফারদিনের হাতের ঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ অন্যান্য সব সংশ্লিষ্ট আলামত বিবেচনায় নিয়ে আমাদের তদন্তে বের হয়ে আসে যে, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত ৪ নভেম্বর বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন ফারদিন। গত ৭ নভেম্বর তার লাশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। ফারদিনের কবাবা কাজী নুর উদ্দিন রামপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।