জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসসড়ক দুর্ঘটনা রোধে চাই আইনের কঠোর প্রয়োগ

মো. আরাফাত রহমান |

সড়ককে নিরাপদ করার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর ২২ অক্টোবর পালিত হয়ে আসছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে মন্ত্রী সভার বৈঠকে ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অনুমোদন করা হয়। একই বছরের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত হয়। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘আইন মেনে সড়কে চলি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’। সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের সৃষ্ট স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে একটি জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকাল শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় পায়ে হেঁটে বা যানবাহনে চলাফেরা রীতিমত বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বাসায় সঠিক সময়ে কেউ না ফিরলে যে কথাটি সর্ব প্রথম মনে উদয় হয় তা হয়-সড়ক দুর্ঘটনা।

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পর বাংলাদেশের সড়ক পথের যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। রিকশা, ভ্যান, সাইকেল, ঠেলাগাড়ি, অটোরিকশা ইত্যাদির সংখ্যা অগণিত। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এগুলো প্রায় ৩০ গুণ বেশি যা উপলব্ধি করা যায় দেশের বৃহত্তম শহরগুলোতে কর্মসংস্থানের উদ্দেশে বন্যার বেগে ছুটে আসা মানুষ আর যানবাহনের ভিড়ে রাস্তাগুলোতে দীর্ঘ জ্যামের দিকে লক্ষ্য করলেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে সারা পৃথিবীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ১৩ লাখ মানুষ নিহত হন যা খুবই অপ্রত্যাশিত। 

যে হারে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ সড়ক দুর্ঘটনা বর্তমানের তুলনায় ৬০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার উন্নত বিশ্বের তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি। এক হিসেবে দেখা গেছে বাংলাদেশে প্রতিবছরে ৫ হাজারেরও বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের বিআরটিএ-এর জরিপ মতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর ২৩ হাজার ১৬৬ জন মানুষ নিহত হন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১ লাখ ৮০ হাজার শিশু মারা যান। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯৬ শতাংশ শিশু ছিলেন অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যে ক্ষতি হয় তার আর্থিক পরিমাণ দাঁড়ায় বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা যা জিডিপির দুই ভাগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে আন্তর্জাতিকভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় ৫২০ বিলিয়ন ডলার। উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশে এর পরিমাণ ৬৫ বিলিয়ন ডলার। সড়ক দুর্ঘটনা পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। এর ফলে হঠাৎ করে বিপর্যয় নেমে আসে একটি পরিবারে। সেই শোক গোটা পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের বুকে শেলের মতো বিধে থাকে সারা জীবন। অনেক সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সমাজ ও দেশ হারায় তার কৃতি সন্তানদের। এ দুর্ঘটনা অনেককে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দেয়।

আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য এককভাবে কেউ দায়ী নয়। নানাবিধ কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে যার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো ১. চালকদের অসাবধানতা, অদক্ষতা ও লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক। ২. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন। ৩. রাস্তার স্বল্পতা ও অপ্রশস্ততা। ৪. প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চালানো এবং ওভারটেকিং ৫. প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশের অভাব ও ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গ করা। ৬. যানবাহনে ব্যবহৃত তেলে ভেজাল। ৭. রাস্তার মধ্যে প্রয়োজনীয় ডিভাইডার না থাকা। ৮. ওভারব্রিজের স্বল্পতা ও অসাবধানে রাস্তা পারাপার বা রাস্তা পারাপারের নিয়ম না জানা। ৯. রিকশা ও ভ্যানের সংখ্যাধিক্য। ১০. সড়কের ওপর অবৈধ হাটবাজার ও স্থাপনা। ১১. ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অজ্ঞ ও ক্ষেত্র বিশেষে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে অদক্ষ রিকশাচালকদের রিকশা ও ভ্যান চালনা। ১২. ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা স্বল্পতা ও দায়িত্বহীনতা। ১৩. বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা না করে যখন-তখন যেখানে-সেখানে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। ১৪. অতিরিক্ত মাল ও যাত্রী বোঝাই, পথ-সভা, হরতাল প্রভৃতি কারণে যানজট সৃষ্টির ফলে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়া এবং ১৫. সড়ক পরিবহনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ধরনের কর্মচারীদের দুর্নীতি। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার জন্যে ছোটখাট আরো নানাবিধ কারণ রয়েছে।

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার যেসব চিত্র পাওয়া যায় তা সত্যিই দুঃখজনক। দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনা মুর্হূতের মধ্যে ছিনিয়ে নিচ্ছে মানুষের অমূল্য জীবন, ভেঙে দিচ্ছে অসংখ্য সাজানো সংসার। স্বজন হারা মানুষের আহাজারি, পিতৃহারা সন্তানের আকুতি ‘আর যেনো কোনো সন্তানকে এতিম হতে না হয়’। কোথাও বাসের সঙ্গে বাস, কোথাও বাসে-ট্রাকে, কোথাও টেম্পু-বাসে ঘটে এ দুর্ঘটনা। আবার কোথাও রিকশা বা নিরীহ পথচারীকে চাপা দেয় দ্রুতগামী বাস বা ট্রাক, কেড়ে নেয় অমূল্য জীবন।

ঢাকা বিশ্বের অন্যতম জনবহুল মেগাসিটি। প্রায় আড়াই কোটি লোকের তুলনায় এখানে রাস্তা বা যানবাহন কোনোটাই যথেষ্ট নয়। আর যেগুলো আছে সেগুলোর বেশিরভাগই জরাজীর্ণ। ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার পাশাপশি মৃত্যুর সংখ্যা। তুলনামূলকভাবে ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে দুর্ঘটনার হার কিছুটা কম। দূরপাল্লার বাস, ট্রাকই মূলত এক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার হয়। অনেক সময় ফেরিতে উঠতে গিয়ে অথবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গাছে ধাক্কা খেয়ে, অথবা প্রতিযোগিতামূলকভাবে কোনো গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে সংঘটিত দুর্ঘটনা অকালে বিধবার সাজে সাজাচ্ছে কাউকে, কাউকে বা করছে এতিম, সহায় সম্বলহীন। 

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার সর্বদা সচেষ্ট থাকা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না। এর ফলে অকালে মা হচ্ছেন সন্তান হারা, স্ত্রী হচ্ছে স্বামী হারা আর সন্তান হচ্ছে পিতৃহারা। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর গণআন্দোলনে নামে দেশের প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা নিজের হাতে ট্রাফিক কন্ট্রোল করে দেশের আইন যে অন্ধত্বের ভূমিকা পালন করছে তা হাতেনাতে দেখিয়ে দিয়েছে। তাই আমাদেরকে আজ ভাবতে হচ্ছে এর প্রতিকার ব্যবস্থা নিয়ে। 

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিকারের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে: ১. সাবধানে গাড়ি চালনার জন্য চালকগণকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি মহাসড়কে অবৈধ রিকশার অনুপ্রবেশ রোধ। ২. অনির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং বন্ধ। ৩. লাইসেন্স দেয়ার পূর্বে চালকের দক্ষতা ও যোগ্যতা ভালভাবে যাচাই-বাছাই করা। লাইসেন্সবিহীন কেউ যেনো গাড়ি চালাতে না পারেন সেদিকে লক্ষ্য রাখা। ৪. গাড়ি রাস্তায় বের করার পূর্বে এর যান্ত্রিক কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলে দুর্ঘটনা অনেকাংশেই হ্রাস পাবে। ৫. সড়ক দুর্ঘটনার শাস্তির মেয়াদ আরো বাড়ানো দরকার। ৬. মোটরযান অধ্যাদেশে যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে তা বাড়ানো দরকার। ৭. কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রচলিত পদ্ধতিতে লাইসেন্স প্রদানে প্রতিবন্ধকতা ও লাইসেন্সের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কম দামে জাল লাইসেন্স তৈরি ও বিক্রি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা কাগজপত্রের প্রমাণের অভাবে প্রতিকার করা দুরূহ। এ ধরনের জাল সার্টিফিকেট দেয়া বন্ধ করা জরুরি। ৮. পুলিশ ও বিআরটি-এর কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে ৯. বীমা আইনের আওতায় বীমার টাকা তোলার বিষয়টি আরো সহজ করা দরকার। ১০. হাইওয়েতে মানুষ চালিত বাহন চলাচল বন্ধ করে তাদের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি করা দরকার। ১১. রাস্তায় পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ১২. ফুটপাত হকারদের দখলমুক্ত করে পথচারী চলাচলের উপযোগী করে তোলার বিষয়গুলো মাথায় রেখে গোটা ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন ঘটানো অপরিহার্য। অন্যথায় সড়ক দুর্ঘটনা দিনের পর দিন আরো বাড়তে থাকবে, যা দেশ ও জাতির জন্যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি পথচারীকেও ট্রাফিকের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ১৩. গাড়ির প্রতিটি চালক ও যাত্রীদের স্মরণ রাখতে হবে সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। তাই সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রয়োজন কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে অতিরিক্ত মাল ও যাত্রীবহন বন্ধ করা। ১৪. প্রয়োজনে সব রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। 

বর্তমান সমাজে ঘর থেকে বের হলেই প্রত্যেক মানুষকে সড়ক দুর্ঘটনা নামক আতঙ্ক তাড়া করে বেড়ায়। প্রতিদিন দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে। যার ক্ষয়ক্ষতি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। জনসচেতনতা এবং প্রয়োজনীয় সরকারি বেসরকারি পদক্ষেপই এই মহামারিকে রুখে দিতে পারে। প্রতিটি প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করতে হবে। কিন্তু নিশ্চয়ই পথের বলি হয়ে কেউ মরতে চাই না। তাই সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি যতই জটিল সমস্যা হোক না কেন সকলের সামগ্রিক চেষ্টা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে এ থেকে রক্ষা পাওয়া তেমন কোন কঠিন কাজ নয়। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ –এ স্লোগানে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

লেখক: কলামিস্ট

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! এবারও ভারতে ছাপা হবে ১ কোটি পাঠ্যবই - dainik shiksha এবারও ভারতে ছাপা হবে ১ কোটি পাঠ্যবই ইউজিসিতে দুইজন নতুন সদস্য - dainik shiksha ইউজিসিতে দুইজন নতুন সদস্য বুয়েটের নতুন ভিসি অধ্যাপক বদরুজ্জামান - dainik shiksha বুয়েটের নতুন ভিসি অধ্যাপক বদরুজ্জামান উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি ওবায়দুল ইসলাম - dainik shiksha উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি ওবায়দুল ইসলাম ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি হতে না দেয়ার হুঁশিয়ারি বদলি প্রত্যাশীদের - dainik shiksha ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি হতে না দেয়ার হুঁশিয়ারি বদলি প্রত্যাশীদের নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে যা যা করতে হবে - dainik shiksha ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে যা যা করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নতুন ডিজি আব্দুল হাকিম - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নতুন ডিজি আব্দুল হাকিম কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056970119476318