হ*ত্যার হুমকি, চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের জিডি

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চট্টগ্রাম |

হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম মহানগরীর সেন্ট স্কলাসটিকাস গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শিল্পী সেলিন কস্তা।  

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিষয়টি গণমাধ্যমের নজরে আসে। এর আগে গত ৩০ জুন অনলাইনে নগরীর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন তিনি। জিডিতে স্কুলের শিক্ষক শার্লিন সুবেরিত ইউজিন (৩৫), মাগ্রেট মনিকা জিন্স (৪০), নীল রাসেল সোহার (৫০) ও বেবি চন্দ্রের (৪০) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই বাবুল কুমার পাল শুক্রবার সকালে বলেন, ‌‌‘ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে সেন্ট স্কলাসটিকাস গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ একটি জিডি করেছেন। নন এফআইআর হওয়ায় অভিযোগটি তদন্তের জন্য অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের অনুমতি পাওয়া গেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।’

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ‘স্কুলের সামগ্রিক বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ওই প্রতিবেদন তৈরির পর থেকে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধনে তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে মর্মে অনুমান করায় তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধন করার চেষ্টায় লিপ্ত আছেন। ৩০ জুন দুপুরে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে শিক্ষকদের সঙ্গে এক মিটিংয়ে চার শিক্ষক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বাতিল করাসহ অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।’

স্কুলের ওই তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে স্কুলের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অনৈতিক আচরণের অভিযোগ এনে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন অন্য ৪৭ জন শিক্ষক। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম আর্চ বিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদারের নির্দেশে অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন অধ্যক্ষ শিল্পী সেলিন কস্তা। কমিটিতে সিন্টার বৃন্তা রেমাকে আহ্বায়ক, ব্রাদার রক্তিম চিরানকে প্রধান সমন্বয়কারী এবং প্রভাষক ওমর ফারুককে আইসিটি বিষয়ক সহায়তা প্রদানকারী হিসেবে সদস্য করা হয়।

পরে তদন্ত কমিটি অভিযোগ ওঠা দুই শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, ফেসবুকসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে ও তাদের সাক্ষাৎকার নেয়। পাশাপাশি ওই শিক্ষার্থীর ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। অভিযোগকারী শিক্ষকদের কাছ থেকেও তথ্য ও সাক্ষাৎকার নেন কমিটির সদস্যরা। একইভাবে অভিভাবকদের কাছ থেকে সাক্ষাৎকার ও লিখিত ডকুমেন্টস নেয় কমিটি। তদন্তে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পাশাপাশি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীসহ আরও কয়েক শিক্ষার্থীর ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ঘটনার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তাদের মধ্যে ১০ জন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। অভিযুক্ত শিক্ষকদের মানহানি করে তাদের চাকরিচ্যুত করার জন্য এমন কর্মকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িত সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা ও আইনি পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে। ৫ জুন অধ্যক্ষের কাছে ওই প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ১০ শিক্ষকের মধ্যে চারজনের নাম জিডিতেও রয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.011255025863647