ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার দ্যা সূর্যসেন হলে কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৮ তারিখ) বিকেলে সূর্যসেন হলের ২২৮, ২৩৭, ২৪৮ এ তিন রুমে অতিরিক্ত ছাত্র প্রবেশ করানোকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন সমর্থিত তুষার-রাকিব গ্রুপের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সমর্থিত শৈশব গ্রুপের সদস্যদের হাতাহাতির এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভপতি মাজহারুল কবির শয়নের সমর্থিত গ্রুপের তুষার-রাকিরের অনুসারীরা উল্লেখিত রুমগুলোতে তাদের সমর্থিত ছাত্রদের সিট দেয়। এই ঘটনা জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সমর্থিত গ্রুপের শৈশব ও তার অনুসারীরা এসে তাদের রুম থেকে বের করে দেয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্রে করে দুই গ্রুপের সদস্যদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ঘটনা স্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের দ্বিতীয় বর্ষের এক আবাসিক শিক্ষার্থী জানায়, বেলা চারটায় হঠাৎ করেই ২২৮ রুমে চার জন, ২৩৭ রুমে দুইজন এবং ২৪৮-নং রুমে শয়নের সমর্থিত এক ছাত্রকে হলের ক্যান্ডিডেট তূষার সমর্থিত সিনিয়ররা এসে সিট দেয়। এতে সৈকতের সমর্থিত ক্যান্ডিডেট শৈশবের গ্রুপের সিনিয়ররা ঘটনাস্থলে এসে তাদের রুম থেকে বের করে দেয়। এতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং সবাই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এসময় পদ প্রত্যাশী ১৬-১৭ সেশনের রাকিব ভাই শৈশব ভাইয়ের গলা চেপে ধরার চেষ্টা করলেও পাশে থাকা তুষার ভাই তাকে থামানোর চেষ্টা করেননি। এসময় দুই পক্ষের কর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।
শাখা ছাত্রলীগের হল প্রার্থী ১৬-১৭ সেশনের মার্কেটিং বিভাগের তুষার হোসাইন বলেন, আমি শয়ন ভাইয়ের রাজনীতি করি। কিন্তু হলে আমার কোনো অনুসারী নেই। আজকের ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
অপর হল পদ প্রত্যাশী শৈশব বলেন, প্রতিটি হলের অঞ্চলভিত্তিক রুম বরাদ্দ হয়ে থাকে। কিন্তু সূর্যসেন হলে এখনো আলাদা রুম বরাদ্দ করেনি ছাত্রলীগ। কিন্তু হঠাৎ আজ বিকেলে খুলনা জোনের ২০১৬-১৭ সেশনের তুষার ও রাকিব তার অনুসারী জুনিয়রদের তিনটি রুমে সিট দেয়। যেখানে নতুন শিক্ষার্থীর ধারণক্ষমতা ছিলো না। এ খবর শুনে আমি ২৪৮ নম্বর রুমের সামনে গেলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাকিব আমাকে ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করে। এসময় তুষার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো। কিছুক্ষণ পরে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি শয়ন ভাই এসে তুষারের অনুসারীদের রুম থেকে সরিয়ে দেয়। এটা হলের আভ্যন্তরীণ বিষয়, সাময়িক সমস্যা হলেও এখন বিষয়টি মিটমাট হয়ে গেছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, হাতাহাতি বা সংঘর্ষ এমন কিছুই ঘটেনি। রুমে শিক্ষার্থী উঠানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ বিষয়ে আজ রাত ১০টায় প্রোগ্রাম ডেকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি।