চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হল এ এফ রহমান হলের দেওয়ালে চিকা মারা নিয়ে দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, আবাসিক হল এ এফ রহমানের দেওয়ালে ‘বিজয়’ গ্রুপের নাম লেখা ছিল। সেই নাম মুছে ‘ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স)’ গ্রুপের নাম লেখা নিয়ে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত আট জন।
শিক্ষার্থীরা জানান, চবির হলগুলো দখল করে রেখেছে ছাত্রলীগের ১১টি গ্রুপ। দীর্ঘদিন ধরে এ এফ রহমান হলে আধিপত্য বিস্তার করে আছে বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। পুরো হলের দেওয়ালজুড়ে ‘বিজয়’ লেখাটি চিকা মারা ছিল। ওই হলে থাকা ভিএক্স গ্রুপের নেতাকর্মীরা শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে বিজয় লেখা মুছে নিজেদের গ্রুপের নাম লিখতে যান। এ ঘটনা নিয়ে সকালে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিজয়ের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা ও রামদা নিয়ে এ এফ রহমান হলের সামনে ও ভিএক্সের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে অবস্থান নেন। এরপর রাত ১০টার দিকে ভিএক্সের নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিয়ে এ এফ রহমান হল দখলে নেন। এ সময় সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হন। এর মধ্যে ভিএক্সের দুইজন ও বিজয়ের ছয়জন রয়েছেন বলে জানা গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। মারধরে আহত নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।জানতে চাইলে চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক খোন্দকার মোহাম্মদ আতাউল গণি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আট জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। কারও মাথা ফেঁটেছে। কারও হাত, পা, কোমরসহ বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
এ বিষয়ে বিজয়ের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘এ এফ রহমান হলের দেওয়ালে দীর্ঘদিন ধরে বিজয়ের নাম লেখা। কোনো কারণ ছাড়া ভিএক্সের গ্রুপের নেতাকর্মীরা এই চিকার ওপর চিকা মেরেছে। এ ঘটনা পুরোটা পরিকল্পিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার নির্দেশে ভিএক্সের নেতাকর্মীরা এই কাজ করেছে। হামলাও করেছে তারা। এই ঘটনার বিচার চাই।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভিএক্স উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘বিজয়ের নেতাকর্মীরাই ইচ্ছে করে তাদের চিকা মুছে দিয়েছে। তাদের চিকা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। বিজয়ের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার জন্য চিকা মুছে ঝামেলা করতে চেয়েছে। তারা এটি প্রতিহত করেছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন শান্ত। দুই পক্ষকেই নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় কারা জড়িত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’