দেশের স্কুল-কলেজের হাজার হাজার অভিবাসী শিক্ষককে বরখাস্ত করছে কুয়েত। গত ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৫ শ’রও বেশি শিক্ষককের বরখাস্ত করা হয়েছে, আগামী ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ আরও ১ হাজার শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যহতি দেয়ার পরিকল্পনা আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।
কুয়েতের দৈনিক কুয়েতি টাইমসের বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম অ্যারাবিয়ান টাইমস জানিয়েছে, শিক্ষাক্ষেত্রে ‘কুয়েতাইজেশন’— অর্থাৎ নিজ দেশের নাগরিকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটি।
তবে কুয়েতের শিক্ষক পরিষদ সরকারকে এ ব্যাপারে তাড়াহুড়ো না করার আহ্বান জানিয়েছে। পরিষদের ভাষ্য, ঢালাওভাবে অভিবাসী শিক্ষকদের বরখাস্ত করে অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন কুয়েতি নাগরিকদের নিয়োগ দেওয়া হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার মান।
প্রসঙ্গত, গত বছর থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘অভিবাসী শিক্ষকমুক্ত’ করার পদক্ষেপ নিয়েছে কুয়েতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ পদক্ষেপের আওতায় চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত ১৭ হাজার ৮১৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটির প্রতিটি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করা হয় দেড় হাজারেরও বেশি অভিবাসী শিক্ষককে। এই শিক্ষকদের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয়ই আছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ সম্পর্কে কুয়েতি টাইমসকে বলেন, ‘কুয়েতি নারী-পুরুষদের শিক্ষকের পদে নিয়ে আসতেই আমরা এ পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি কুয়েতের শিক্ষক পরিষদের প্রতিনিধি সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে প্রতিনিধিরা শূন্য পদগুলোতে যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে কুয়েতিদের নিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, যদি ঢালাওভাবে শূন্যপদগুলোতে কুয়েতিদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে স্কুল-কলেজগুলোর শিক্ষার মান পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।’
‘তাদের এই পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা আপাতত আর ঢালাও ভাবে বরখাস্ত করা থেকে বিরত থাকছি। এখন থেকে আমরা যোগ্যতাসম্পন্ন কুয়েতি নাগরিকদেরই শিক্ষক পদে নেব।’
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, চলতি ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে আরও ১ হাজার অভিবাসী শিক্ষককে অব্যাহত দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল মন্ত্রণালয়ের, তবে ‘বরখাস্ত নীতিতে’ পরিবর্তন আসায় আপাতত এই সময়সীমাকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে করা হয়েছে।