সাতক্ষীরা সদরের বাঁশতলা গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অরবিন্দু মন্ডলকে (৮০) হাত-পা বেঁধে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে ছেলে বিশ্বনাথ মন্ডল ও তার স্ত্রী কবিতা মন্ডলের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার এঘটনা ঘটে। তবে এতোকিছুর পরও ছেলে ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করতে বা বিচার চাননা বাবা।
এ ঘটনার একটি ভিডিয়ো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে মঙ্গলবার সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে, পুলিশ আসার খবর শুনে নির্যাতনকারী স্বামী-স্ত্রী পালিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
জানা যায়, অরবিন্দু মন্ডল বাঁশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক। তিনি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন।
নির্যাতনের শিকার অরবিন্দ মন্ডলের মেয়ে অঞ্জনা মন্ডল বলেন, ‘আমার বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অরবিন্দু মন্ডলের প্রথমে গচ্ছিত ১ লাখ টাকা হারিয়ে যায়। পরে হারায় আরো ৫০ হাজার টাকা। যে টাকা আমার ভাইয়ের স্ত্রী কবিতা মন্ডল নিয়েছে বলে সন্দেহ রয়েছে। চুরি হওয়া টাকা স্থানীয় এক মেম্বরের কাছে সুদে খাটাত কবিতা। টাকা ফেরত চাইলে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে প্রায়ই বাবাকে নির্যাতন করত। সোমবার সকালে বাবার হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালায় ভাই ও তার স্ত্রী। বিষয়টি স্থানীয় এক যুবক ভিডিয়ো করে ফেসবুকে ছাড়লে প্রশাসনের নজরে আসে।’
স্থানীয় একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অরবিন্দু মন্ডলের গচ্ছিত দেড় লাখ টাকা চুরি করে নিয়েছে পুত্রবধূ কবিতা। টাকা ফেরত চাইলে স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে তাকে বেঁধে মারপিট করে। এর আগেও কারণ-অকারণে তারা শিক্ষক বাবাকে মারপিট করত।’
তবে এতকিছুর পরও ছেলে ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করতে চাননা অরবিন্দু মন্ডল। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে অরবিন্দু মন্ডলের ২ সন্তান। তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। আর তাছাড়া সন্তানের বিরুদ্ধে শিক্ষক পিতা মামলা করে কিভাবে?’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সমাজের একটা বাস্তব অথচ নিষ্ঠুর চিত্র এটি। ভিডিয়োটা দেখার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছিল। বর্তমান ছেলে ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছে।’
কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান পুলিশ সুপার।