দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে ডান হাত হারানো শিশু নাইম হাসানকে ৩০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট হিসাব (এফডিআর) করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে ১৫ লাখ টাকা আগামী এপ্রিল ও বাকী অর্থ ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ বছর মেয়াদি এফডিআর করে দিতে নির্দেশ দেন আদালত। আর শিশুটির এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া পর্যন্ত প্রতিমাসে ৭ হাজার টাকা করে দিতে নির্দেশ দেন বিচারক। ওয়ার্কশপের মালিককে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক, মো. বাকির উদ্দিন ভূইয়া ও আইনজীবী তামজিদ হাসান। ওয়ার্কশপ মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল বারেক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর ‘ভৈরবে শিশুশ্রমের করুণ পরিণতি’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে শিশুটির বাবা হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে শিশুটিকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনা নিজ কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা দিয়ে অনুসন্ধান করতে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই রুলের ওপর ৫ ডিসেম্বর শুনানি শেষ হয়।
২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইম হাসানের বয়স ১০ বছর। পড়ছে চতুর্থ শ্রেণিতে। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামে। তার বাবা আনোয়ার হোসেনের পেশা জুতা ব্যবসা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ে আনোয়ার হোসেন কর্মহীন হয়ে পড়েন। এ সময় সংসারের চাপ সামলাতে নাইমকে তার মা–বাবা কিশোরগঞ্জের ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপে কাজে দেন। এই ওয়ার্কশপের কাজ করতে গিয়েই মাসখানেক আগে তার ডান হাতটি মেশিনে ঢুকে যায়। শেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় ডান হাতটি।