হাবিপ্রবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় নেতৃত্ব দেয়া শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রাপ্ত নেতাকর্মী ও হামলাকারীদের সঙ্গে ক্লাস-পরীক্ষায় বসবে না বলে বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে নিজ নিজ বিভাগ থেকে তাদেরকে চিহ্নিত করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
হামলাকারী এবং হামলায় মদদদাতাদের চিহ্নিত করে মামলার প্রস্তুতিও চলছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে হামলার ও হুমকির শিকার হওয়া শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সরকার পতনের কাছাকাছি সময়ে আবার কেউ কেউ পতনের পরপরই খোলস পাল্টে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাতারে ভেড়ার চেষ্টা করছেন। সশস্ত্র হামলা চালানো এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো এসব ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ ফেসবুক প্রোফাইল লাল করে, আবার কেউ কেউ সহমত পোষণ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাতারে ভিড়ছেন।
নতুন করে সাধারণের দলে ভেড়াদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহাগ হায়দার আারাফাত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যেতে বাঁধা দিয়েছিলেন। বিষয়টি জানতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিক ঢাকা টাইমসের প্রতিনিধি মো. রাফিউল হুদা। প্রমাণ হাতে পেয়ে বিষয়টি সত্যতা যাচাই করতে গেলে সোহাগ ও তার দলবল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত মো. রাফিউল হুদাকে হল থেকে বের করে দেয়ারও আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। সেই সোহাগও ভিড়েছেন সাধারণদের দলে। এদিকে সাংবাদিককে হুমকিদাতা সোহাগের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন হেনস্তার শিকার হওয়া এই সাংবাদিক।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের একজন ইমরান হোসাইন বলেন, শাখা ছাত্রলীগের ৫৯ সদস্যদের নেতৃত্বসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটির নতুন পদ ও হল কমিটির পদলোভী যেসব কর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, মেসে গিয়ে গিয়ে লাগাতার হুমকি দিয়েছে তাদেরকে আমরা সম্মিলিতভাবে বয়কট করলাম। এছাড়াও যারা সে সময়টাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও দূর্বল করার জন্য লাগাতার গুজব ছড়িয়েছে তারাও এর আওতাভুক্ত থাকবে। খোলস পাল্টে লাভ নেই। এই ছোট্ট ক্যাম্পাসে আমরা সবাই সবাইকে চিনি।
ইমরান আরও বলেন, এদেরকে ক্ষমা করলে শহীদ আবরার ফাহাদ, শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ মুগ্ধসহ হাজারো শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানী করা হবে। তারা আমাদেরকে ক্ষমা করবে না৷ আর এই বয়কট পরবর্তী প্রজন্মের এবং ক্ষমতাশালীদের দোসরদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমাদের এই বয়কটে কেউ কারো জন্য সুপারিশ বা দালালি করলে আমরা সেই দালালকেও বয়কট করবো।