ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া নিহত হয়েছেন। ইরানে এক হামলায় ইসমাইল হানিয়া নিহত হন বলে নিশ্চিত করেছে হামাস। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীও হামাসের এ শীর্ষ নেতার নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার বিষয়ে এক বিবৃতি দেয়। তবে তিনি কীভাবে নিহত হয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আজ বুধবার সকালে ইসমাইল হানিয়ার নিহত হওয়ার খবর প্রচার করে। টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, রাজধানী তেহরানে হামলায় ইসমাইল হানিয়ার দেহরক্ষীদের একজনও নিহত হন।
ইসমাইল হানিয়া কে?
ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধানের পদে থাকলেও তাঁকেই এই গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মনে করা হয়।
গত শতকের আশির দশকে হামাসের উত্থানকালে ফিলিস্তিনি সুন্নি মুসলিমদের এই রাজনৈতিক ও সামরিক আন্দোলনের সামনের কাতারে ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দের তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ইসরায়েল। এরপর ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে আরও কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে হানিয়াকে ইসরায়েল ও লেবানন সীমান্তের শূন্যরেখায় ছেড়ে দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এক বছর নির্বাসনে থাকার পর ইসমাইল হানিয়া গাজায় ফেরেন। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে হামাসের মতাদর্শিক গুরুর কার্যালয়ের প্রধানের দায়িত্ব পান তিনি। এতে হামাসে তাঁর পদমর্যাদা বাড়ে।
ফিলিস্তিনের জাতীয় নির্বাচনে হামাস বেশির ভাগ আসনে জয় পাওয়ার পর ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ইসমাইল হানিয়াকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। কিন্তু সপ্তাহব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গাজায় মাহমুদ আব্বাসের দল ফাত্তাহর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হানিয়াকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে হানিয়ে ওই সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি তাদের জাতীয় দায়িত্ব থেকে সরবে না এবং তিনি গাজা শাসন করতে থাকেন।
পরে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হন। পরের বছর ইসমাইল হানিয়াকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। কয়েক বছর ধরে ইসমাইল হানিয়া কাতারে বসবাস করে আসছিলেন।