বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে সেনা কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন মাধ্যমে এ দাবি জানানোর পাশাপাশি মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) এ নিয়ে সচিবালয়েও যান তারা।
গতকাল বুধবার কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে দাবি সংবলিত পোস্টার এবং ব্যানার লাগানো দেখা যায়। মূলত হাসপাতালকে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার হাত থেকে রক্ষা করতেই এমন দাবি করছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একটি অংশ। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি হাসপাতাল পরিচালনার সঙ্গে জড়িত প্রশাসনের ঊধ্র্বতন কেউ।
এর আগে গত রোববার ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (শেবাচিম) পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম পদত্যাগ করেন। এরপর থেকেই সংশ্লিষ্টদের মাঝে সেনাবাহিনী থেকে পরিচালক নিয়োগের দাবি উঠেছে।
এমবিবিএস ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) কোনো শিশুর জন্ম হলে টাকা ছাড়া নবজাতকের মুখ দেখতে পারেন না বাবা-মা। প্রতিটি পদে পদে দালালদের টাকা দিতে হয় এবং একটা সিন্ডিকেট পরিচালকদের থেকে শুরু করে সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণে সেনাবাহিনীর কোনো কর্মকর্তাকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন শেবাচিমের মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা।
তিনি আরো বলেন, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অবস্থা আমাদের চেয়েও খারাপ ছিল। সেখানে সেনবাহিনীর সদস্যকে দায়িত্ব দেবার পর সেবার মান আমূল পাল্টে গেছে। এমন উদাহরণ আরো আছে। তাই দক্ষিণাঞ্চলের সেবাপ্রত্যাশী কোটি মানুষের কথা চিন্তা করে একজন সেনাবাহিনীর একজন দক্ষ ব্যক্তিকে শেবাচিমে দেয়া উচিত।
এমবিবিএস ৫ম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বিগত দিনগুলোতে দেখা গেছে যে চিকিৎসকেরা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে তারা সিন্ডিকেট নির্ভর হয়ে পরেছিলেন। সেসব সিন্ডিকেটের সঙ্গী হয়ে নানা অনিয়ম - বিতর্কের জন্ম দিলেও হাসপাতালের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটাতে পারেন নি তারা। তাই আমরা এবার পরিচালক হিসেবে একজন সেনা কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেবার দাবি জানাই।
ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. হেদায়েত উল্লাহ জানান, হাসপাতালে বিগত দিনে যেমন অনিয়ম, দুর্নীতি এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তাহীনতার চিত্র দেখা গেছে তার পুনরাবৃত্তি কেউই চায় না। যেহেতু বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়োজিত করে চোখে পরার মতো উন্নয়ন ও সংস্কার হয়েছে তাই শেবাচিমেও একজন সেনা কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি তাদের।