করোনা ডেডিকেটেড ঘোষণা করায় সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালের বহির্বিভাগ স্থানান্তরিত করা হয়েছে ৫০০ গজ দূরে কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে। ফলে রোগীদের ভোগান্তি ও ব্যয় বেড়েছে।
হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না পেয়ে আবার স্কুলে বা কাছের কোনো হাসপাতালে যেতে হচ্ছে তাদের।\হসেবার মানের দিক থেকে সারাদেশের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২০১৫ সালে প্রথম, ২০১৮ সালে পঞ্চম ও ২০১৯ সালে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বারবার স্বীকৃতি অর্জন করেছে।কিন্তু বর্তমানে জনবল সংকটের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। দেড় লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসকের ২২টি পদের বিপরীতে আছে মাত্র আটজন। বাকি পদগুলো অনেক আগে থেকেই শূন্য। এ অবস্থায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।\হবিশেষত হাসপাতালটিকে করোনা ডেডিকেটেড ঘোষণা করার পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রোগী এলেই তাদের পার্শ্ববর্তী কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষাও করা হচ্ছে। প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় ব্যক্তির শরীরে করোনা শনাক্ত হচ্ছে। বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যাও।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
অথচ পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না তারা।\হজয়পুরহাট-২ আসনের এমপি ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্ব্বপন বলেন, করোনা ডেডিকেটেড ঘোষণা করার ফলে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা এখানে সেবা পাচ্ছেন না। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের পাঠানো হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ক্ষেতলাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেই সঙ্গে হাসপাতালের একাংশ পার্শ্ববর্তী স্কুলে স্থানান্তর করায় সবকিছু মিলে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার হাতিয়র গ্রামের নমিজন বেওয়া বলেন, 'কয়েক দিন ধরে শরীর খুব দুর্বল, খেতে পারছি না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য এসেছি। কিন্তু করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে ওরা আমাকে ভর্তি করে নিল না। বাড়িতে চলে যাচ্ছি। মরণ হয় বাড়িতেই হোক।'\হনাম প্রকাশ না করা শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন মেডিকেল অফিসার জানান, করোনা ডেডিকেটেড ঘোষণা করা হলেও স্বাস্থ্যকর্মীদের নেই প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ।
পিপিই, হ্যান্ড গ্লাভস, অক্সিজেন সিলিন্ডার, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাসহ প্রয়োজনীয় উপকরণেরও সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় তাদের মধ্যেও অস্বস্তি রয়েছে।
তবে বিশৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর আসাদ উজ-জামান বলেন, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালট্যান্ট ও মেডিকেল অফিসারের পদ কম থাকলেও সামর্থ্য অনুযায়ী রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে করোনা রোগীদেরও সেবা দেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন