জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে ১০-১৪ বছর বয়সী মেয়েদের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা দেবে সরকার। এ লক্ষ্যে সারাদেশে ১০-১৪ বছর বয়সী মেয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রথম ধাপে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা বিভাগে এইচপিভি ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হবে। পরে ধাপে ধাপে অন্য বিভাগগুলোতেও এ টিকা দেয়া হবে।
বুধবার (৯ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আখতারুজ্জামানের সই করা চিঠিতে বলা হয়, আগামী সেপ্টেম্বরে ১০-১৪ বছর বয়সী শিশু-কিশোরীদের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধী কার্যকর এইচপিভি ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে।
উল্লিখিত বয়সসীমার অধিকাংশ জনগোষ্ঠী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রী হওয়ায় বিদ্যমান ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কার্যক্রম) টিকাদান কেন্দ্রের পাশাপাশি দেশের স্কুলসমূহে ভ্যাকসিনেশন সেশন আয়োজন করা হবে এবং সেপ্টেম্বর সময়কালে প্রথম ধাপে ঢাকা বিভাগে এ ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এমতাবস্থায় ঢাকা বিভাগে এইচপিভি ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এ বিভাগের আওতাধীন ঢাকা বিভাগের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫ম-৯ম শ্রেণি বা সমমানের ছাত্রীদের শ্রেণিভিত্তিক সংখ্যা নির্দিষ্ট ফরম্যাট অনুযায়ী পাঠাতে হবে। এ বিভাগের অধীনস্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা প্রদানের পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে।
এইচপিভি জরায়ুমুখ ক্যানসারের জন্য দায়ী একটি ভাইরাস। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে সরকারিভাবে গাজীপুরে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০ হাজারের মত ১০ বছর বয়সী মেয়েদের জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছিল। ছয় মাসের মধ্যে দুই ডোজ টিকা দেওয়ার মাধ্যমে পাইলট প্রকল্পটি শেষ হলেও এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি আর বর্ধিত হয়নি।
দীর্ঘদিন পর ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১২ মার্চ এইচপিভি টিকার জন্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি) বাংলাদেশকে অনুমোদন দেয়। এরপর গত বছরের জুলাই থেকে দেশজুড়ে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও নানা কারণে তা পেছাতে পারে বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই। অবশেষে সেই টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।