১১ সেপ্টেম্বর হাবিপ্রবিতে পালিত হবে না বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

দৈনিক শিক্ষাডটকম, হাবিপ্রবি |

আগামী ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হচ্ছে না হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি)।

১০ আগষ্ট (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়। উক্ত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ পুন:নির্ধারনের লক্ষ্যে জরুরি বিবেচনায় আগামী ১১.সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উপলক্ষে ক্লাস ছুটিসহ বিবিধ কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। উক্ত তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে পরিচালিত হবে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির জানান, ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডে প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ ৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পাশ করা হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসলে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ তম রিজেন্ট বোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পরিবর্তন করে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এর তারিখ, ১১ সেপ্টেম্বর করা হয়। প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ অথবা ক্লাস শুরুর তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালিত হয়।

আমাদের প্রকৃত বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ৮ এপ্রিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পরিবর্তন করে ১১ সেপ্টেম্বর করেছে। আমরা প্রকৃত দিনই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে উদযাপন করতে চাই। ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করলে ছাত্র জনতার রক্তের সাথে বেঈমানী করা হবে।

তিনি আরো বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয় এবং আজ সেই কমিটি আমাদের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে। রিপোর্টে তারা ৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করার সুপারিশ করেছেন। আগামীকাল বর্তমান দায়িত্ব প্রাপ্ত স্যারের অনুমতি স্বাপেক্ষে নোটিশ প্রকাশ করা হবে এবং আগামী একাডেমিক কাউন্সিল ও রিজেন্ট বোর্ড সভায় তা পাশ করা হবে। আমরা আগামী ৮ এপ্রিল ধুমধাম করে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করবো।

উল্লেখ্য যে, উত্তরবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরুর পূর্বে এটি ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (এইটিআই) হিসেবে কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রদান করতো। পরে ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ১১ নভেম্বর ইনস্টিউটকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। এটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত একটি কলেজ ছিল। 

১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়। সেসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ আনিসুর রহমান কে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রকল্প পরিচালকের অধীনেই ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ব্যাচ ও ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় ব্যাচ ছাত্র ভর্তি সম্পন্ন হলেও বিশ্ববিদ্যালয় এর আইন, প্রজ্ঞাপন , পরীক্ষা পদ্ধতি,উপাচার্য নিয়োগ সহ নানাবিধ জটিলতার কারণে কার্যত অচল থাকে বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হয়। পরে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রজ্ঞাপন জারিতে আবারো জটিলতা দেখা দেয়। পরবর্তীতে আবারো শিক্ষার্থীদের দাবিতে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে ৮ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ায় মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মো. মোশাররফ হোসাইন মিঞাঁকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি - dainik shiksha আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ - dainik shiksha শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার - dainik shiksha মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ - dainik shiksha শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন - dainik shiksha অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.010453939437866