সনদ জাল করে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন ১ হাজার ১৫৬ জন। এদের মধ্যে ৭৯৩ জন শিক্ষক নিবন্ধন সনদ, ২৯৬ জন কম্পিউটার সনদ ও ৬৭ জন বিএড-সাচিবিক বিদ্যাসহ অন্যান্য সনদ জালের দায়ে অভিযুক্ত। জাল সনদধারীদের মধ্যে ৮১৭ জন বিভিন্ন স্কুল কলেজে কর্মরত। ৩৩৯ জন আছেন বিভিন্ন মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। যাদের বেশিরভাগই এমপিও (মান্থলি পে অর্ডার) ভুক্ত। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এ অবধি বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করছেন তারা।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) অনুসন্ধানে এসব জাল সনদধারীর তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বেতনের টাকা ফেরত নিতে এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে ডিআইএ। এসব জাল সনদধারী শিক্ষকের তালিকা ধারবাহিকভাবে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে দৈনিক আমাদের বার্তা। শিগগিরই তা প্রকাশ শুরু হবে।
জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল রোববার ডিআইএর যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হয়। বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা শিক্ষকদের সনদগুলো যাচাই করে তাদের সনদ জাল বলে জানতে পেরেছি। যা প্রতিবেদন আকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। এসব শিক্ষকের এমপিও বাতিল ও এমপিও বাবদ নেয়া টাকা ফেরত নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে জাল সনদধারী শিক্ষক আছেন ৪৪৩ জন। তাদের মধ্যে স্কুল-কলেজে কর্মরত ৩২৩ জন। মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে আছেন ১২০ জন। ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে জাল সনদে শিক্ষকতা করছেন ৩৬৬ জন। তাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজে কর্মরত ২৫৬ জন, যাদের কাছ থেকে ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ফেরতের সুপারিশ করা হয়েছে। এ দুই বিভাগের মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন ১১০ জন, যারা ৪ কোটি ৩৫ লাখেরও বেশি টাকা জাল সনদে এমপিও বাবদ আত্মসাৎ করেছেন।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে জাল সনদে কর্মরত ৯৬ জন। যাদের মধ্য স্কুল কলেজে কর্মরত ৪৪ জন এবং মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৫২ জন। তাদের কাছ থেকে ৩ কোটি ৩ লাখ ৪৭ হাজারেরও বেশি টাকা ফেরত নেয়ার সুপারিশ করেছে ডিআইএ।
খুলনা ও বরিশাল বিভাগে জাল সনদধারী ২৫১ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। যাদের মধ্যে স্কুল কলেজে আছেন ১৯৪ জন এবং মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৫৭ জন। এ দুই বিভাগের জাল সনদধারী স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের কাছ থেকে ১১ কোটি ৪০ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি টাকা এবং মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের জাল সনদধারী শিক্ষকদের কাছ থেকে ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা ফেরত নেয়ার সুপারিশ করেছে ডিআইএ।
জাল সনদধারী শিক্ষকদের পরিচয় ও আত্মসাত করা অর্থের পরিমাণ জানতে চোখ রাখুন দৈনিক আমাদের বার্তায়।