১৪ মাস ধরে হাওরভাতা পাচ্ছেন না সুুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার ৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকের ৯০ জন সহকারী শিক্ষক। এতে এসব শিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন শিক্ষকরা।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্মপাশা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ১১০টি ও মধ্যনগর উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ৮৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এই দুটি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ২ হাজার ৫০০ টাকা করে ও সহকারী শিক্ষকরা ২ হাজার ২০০ টাকা করে প্রতি মাসে হাওরভাতা পেয়ে আসছেন। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জানুয়ারি এই দুটি উপজেলার ১৫৪ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগদান করেন।
ওই কার্যালয় থেকে ওই বছরের ২৩ জানুয়ারি ১৫৪ জন শিক্ষকের মধ্যে ৬৪ জন সহকারী শিক্ষককে রাজস্ব খাতে ও ৯০ জন সহকারী শিক্ষককে প্রাক-প্রাথমিকের সৃষ্টপদে পদায়ন করা হয়। রাজস্ব খাতে থাকা সহকারী শিক্ষকরা নিয়োগের পর থেকেই হাওরভাতা বাবদ প্রতি মাসে ২ হাজার ২০০ টাকা করে পেয়ে আসছেন। কিন্তু বাকি ৯০ জন সহকারী শিক্ষক ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ টাকা হাওরভাতা পেয়ে আসছিলেন। টানা এক বছর হাওরভাতা বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের শুধু জুন মাসে বেতনের সঙ্গে এসব শিক্ষকরা এক মাসের হাওরভাতা পেয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেন, একই সময় আমরা ১৫৪ জন সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও ৬৪ জন হাওরভাতা পাচ্ছেন আর আমরা ৯০ জন শিক্ষক হাওরভাতা পাচ্ছি না। আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে।
প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করতে ৯০ থেকে ১২০ টাকা করে খরচ হচ্ছে। এই টাকা বেতন থেকে খরচ হচ্ছে, এতে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
ধর্মপাশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস জানান, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় প্রাক-প্রাথমিকের সৃষ্টপদের ৯০ জন সহকারী শিক্ষক পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। এসব শিক্ষকদের হাওরভাতা বন্ধ থাকায় তারা খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। কিন্তু এখনো হাওরভাতা বাবদ অর্থ বরাদ্দ না আসায় এসব শিক্ষকদের হাওরভাতা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত রয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে থাকা পিইডিপি-৪ প্রকল্পের উপপরিচালক আবুল বাশার বলেন, হাওরভাতার অর্থ বরাদ্দের জন্য ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এ বাবদ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে বকেয়াসহ এই দুটি উপজেলার ৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের ৯০ জন সহকারী শিক্ষককে হাওরভাতা দেয়া হবে।