১৬০ স্কুলে ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র কিনে অপচয় ৩১ লাখ টাকা

ফরিদপুর প্রতিনিধি |

ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দায় ১৬০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপিত বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্রগুলো বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য এসব যন্ত্রগুলো স্থাপন করা হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না। ফলে সঠিক সময়ে স্কুলে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। সরকারেরও অপচয় হয়েছে ৩১ লাখ টাকা।  

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে সালথা ও নগরকান্দার ১৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি বিদ্যালয়ে স্লিপ প্রকল্পের ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দের ওই টাকার ভেতর থেকে ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয় করে প্রতিটি স্কুলে স্থাপন করা হয়েছে। তবে এসব হাজিরা মেশিনের কার্যক্রম চলে দুই মাস। এরপর গত ৩-৪ বছর ধরে অজ্ঞাত কারণে হাজিরা যন্ত্রের ব্যবহার বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষকদের দাবি যন্ত্রগুলো নষ্ট হওয়ায় ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে।

এদিকে হাজিরা যন্ত্র ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে। শিক্ষক সমিতি ও সংশ্লিষ্ট স্কুল শিক্ষকরা সিন্ডিকেট করে নিম্নমানের প্রতিটি হাজিরা যন্ত্র ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা করে ক্রয় করেন। অথচ সালথায় স্লিপ প্রকল্প থেকে প্রতিটি হাজিরা যন্ত্র বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর নগরকান্দায় প্রতিটি যন্ত্র বাবদ বরাদ্দ খরচ দেখানো হয়েছে ২৫ হাজার টাকা করে।

সালথার পুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হওয়ায় এর ব্যবহার করা বন্ধ রয়েছে। মাত্র এক বছর ওয়ারেন্টি ছিলো যন্ত্রটির। ওই এক বছরের মধ্যে যাদের হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়েছিলো তারা মেরামত করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে ওয়ারেন্টি যাদের শেষ হয়েছে তারা আর মেরামত করাতে পারেননি। তাই বিকল হয়ে পড়ে আছে। তার মতো অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও একই দাবি করেন। 

 

সালথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. মাইনুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্লিপের বরাদ্দ থেকে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ কমিটি নিজ নিজ উদ্যোগে হাজিরা মেশিন ক্রয় করে। এখানে শিক্ষক সমিতির কোনো হাত ছিলো না। প্রতিটি মেশিন কেনা বাবদ খরচ হয়েছিল ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে যন্ত্রগুলোর ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বেশিরভাগ যন্ত্রই অকেঁজো হয়ে পড়ে আছে।

নগরকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মানোয়ার হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নগরকান্দায় ৮৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি বিদ্যালয়ে ২৫ হাজার টাকা করে একেকটি হাজিরা যন্ত্র কেনা হয়েছিলো। এসব যন্ত্র বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা নিজেরাই কিনেছেন। তবে যন্ত্রগুলো এখন ব্যবহার করা হচ্ছে না। সবগুলো যন্ত্রই নষ্ট হয়ে আছে।

নগরকান্দা উপজেলা শিক্ষা অফিসার রওনক আরা বেগম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, হাজিরা যন্ত্র কেনার সময় আমি ছিলাম না। তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ের হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়ে আছে বলে দায়িত্বগ্রহণের পর জানতে পেরেছি। 

সালথা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আতিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সবগুলো হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়নি। কিছু ভাল আছে। তবে যেগুলো নষ্ট হয়েছে, সেগুলো মেরামত যোগ্য নয়। আবার মেরামতের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দও নেই।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. অনিছুর রহমান বালী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি যেহেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। তাই প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066890716552734