ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবিতে তিন ঘণ্টা হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে ‘হাইকোর্ট ঘেরাও’ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিচারপতিদের পদত্যাগ অথবা অপসারণে তারা আগামী রোববার পর্যন্ত দেখবেন বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। হাইকোর্টের সামনে হাসিনার পক্ষে স্লোগানদানকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিও জানান তারা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিল নিয়ে দুপুর ১টার দিকে হাইকোর্টে যান। এরপর সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার আবদুল আজিজ ভুঁইয়া গিয়ে কথা বললে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।
কর্মসূচি স্থগিত করার কথা জানিয়ে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, প্রাথমিকভাবে দুইটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যারা এই ফ্যাসিবাদ কাঠামোকে বিদ্যমান রাখার জন্য বিভিন্ন সময় বিচার প্রক্রিয়া প্রভাবিত করে আওয়ামী লীগকে সুবিধা দিয়েছে সেসব বিচারকদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ১২ জনকে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় বিচারকদের অপসারণের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী তাদের নিজেদের পদত্যাগ করতে হয়। কিন্তু আমাদের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর উপর মামলা চলমান। ওই মামলায় যদি আগামী ২০ তারিখ সমাধান চলে আসে যে, বিচারপতিদের অপসারণের দায়িত্ব সুপ্রিম জুডিশিয়ারি কাউন্সিলে। তাহলে সেদিনই আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের সঙ্গে জড়িতদের পদত্যাগ করতে হবে, নইলে তাদের অপসারণ করা হবে। রোববার বিকেল পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব, কী রায় আসে তাদের অপসারণের জন্য।
হাসনাত আরও বলেন, সারাদেশে হাইকোর্ট, জজকোর্টে যাদের হাতে দুই হাজার মানুষের রক্ত লেগে আছে তারা খুনি হাসিনার কথা বলেছে। আমরা পুলিশের কাছে দাবি জানাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিডিও ফুটেজ ধরে ধরে তাদেরকে গ্রেফতার করবেন।
সমন্বয়ক সারজস আলম বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর নতুন বাংলাদেশ গঠনে যারা বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাদেরকে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করব। যে কেউ যে কোনোভাবে দালালদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে ছাত্র-জনতা প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, আমরা স্বৈরাচারকে পালাতে বাধ্য করছি। তবে আমরা দেখছি, ফ্যাসিস্টদের দোসরদের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এদের সাহস কীভাবে হয়, শহীদদের রক্তের ওপর কথা বলে।
অবস্থান কর্মসূচিতে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, আবু বাকের মজুমদার, হাসিব আল ইসলাম, আরিফ সোহেল, জাতীয় নাগরিক কমিটির লিগ্যাল উইং-এর সদস্য আইনজীবী হুমায়রা নুর প্রমুখ কথা বলেন।