৩০ বছর পর স্বজনদের খুঁজে পেয়েছেন কাওছার শেখ। বাড়ি থেকে বেড় হয়ে যাওয়ার ৩০ বছর পর যশোরের অভয়নগর উপজেলার গুয়াখোলা ক্লিনিকপাড়ার বাসিন্দা মৃত দলিল উদ্দিন শেখের বড় ছেলে মো. কওছার শেখ (৪৬) বাড়িতে ফিরে এসেছেন। গতকাল রোববার (১৬ মে) বিকেলে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। এ ঘটনায় পরিবারে আনন্দের বন্যা বইছে।
জানা গেছে, ৩০বছর আগে অভাবের তাড়নায় বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে তিনি স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। স্মৃতিশক্তি হারিয়ে এতোদিন ধরে তিনি ঢাকায় একটি জাহাজ কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন। বিয়েও করেছেন কাওছার। হঠাৎ করে হারানো কওছার শেখের মনে পড়ে তার পরিবার পরিজনের কথা। তার আরও মনে পড়ে মা, ভাই-বোনসহ এলাকার ঠিকানা। সে মোতাবেক গতকাল রোববার সকালে ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়ে বিকালে তাদের বাড়িতে হাজির হন তিনি।
হারিয়ে যাওয়া কওছার শেখ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, দীর্ঘদিন পর আমার মনে পড়তে থাকে মা-ভাইবোনদের কথা। তাই আমি নওয়াপাড়ার শেখ ব্রাদার্সের কর্মচারী ফরহাদের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে আমাদের বাড়িতে হাজির হয়েছি।
দীর্ঘ ৩০বছর পর হঠাৎ করে হারানো কওছার শেখকে দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকেদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে। এ খবর এলাকার ছড়িয়ে পড়লে হারানো কওছারকে একনজর দেখার জন্য বাড়িতে ভীড় জমায়।
হারানো কওছার শেখের ভাই মো. আফসার উদ্দিন শেখ আনন্দে কাঁদতে কাঁদতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, দীর্ঘ ৩০বছর পর হারানো ভাইকে ফিরে পাবো তা কখনও ভাবতে পারিনি। আমরা ধরে নিয়েছিলাম- তিনি হয়তবা আর বেঁচে নেই। রোববার আকস্মিকভাবে ভাইকে ফিরে পেয়ে আমার পরিবারের সকলেই অনেক খুশি।৩০বছর আগে ভাইকে হারানোর বিষয়ে তিনি জানান, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে ভাই বাড়ি থেকে বের হন। পরে যশোরে কিছুদিন থাকার পর চট্রগ্রামে কাজের সন্ধানে গিয়ে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ নেন। ওই সময় ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। তারপর তিনি ঢাকায় গিয়ে জাহাজ কোম্পানিতে কাজ নিয়ে বিয়ে করে ঘর সংসার করতে থাকেন। বর্তমানে ভাইয়ের সংসারে তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।