ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় সোমবার (২১ আগস্ট) বিকালে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ চার শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এ বিচারে সন্তষ্টি প্রকাশ করেছেন নির্যাতনের শিকার ছাত্রী ফুলপরী খাতুন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন বলেন, এই বিচার পেয়ে আমি সন্তষ্ট। আমি শুরু থেকেই ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম। এই ন্যায়বিচার বিশ্ববিদ্যালয়ে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সুষ্ঠ এবং সর্বোচ্চ বিচার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করেছে। তাই প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এ রকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা যেনো শুধু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে না অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও পুনরাবৃত্তি না হয়। এ রকম কঠোর বিচার হলে ভবিষ্যতে আর কেউ সাহস পাবে না। শুধু র্যাগিংই না এর সঙ্গে অন্য কোনো শারীরিক মানসিক জুলুমের মতো আর কোনো ঘটনা ঘটবে না। এ রকম সঠিক বিচার হলে ক্যাম্পাসে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পড়া শুনা শেষ করে বের হতে পারবে।
নিরাপত্তা শঙ্কা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে হলে অবস্থান করছি। কোনো রকমের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি না। খুব বেশী প্রয়োজন না হলে আমি হল থেকে বের হই না।
সভা শেষে বিকাল পাঁচটার দিকে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান এসকল তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০ তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এখন গৃহীত এ সিন্ধান্ত হাইকোর্টে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম, ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী। এরমধ্যে অন্তরা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের। এছাড়া বাকি সবাই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এদিকে, রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর পার্ট-১ ধারা-৪, ৫, ২৭ এবং পার্ট-২ ধারা-৮ মোতাবেক এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আচারণবিধির দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৮ ধারা অনুযায়ী জড়িতদের এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ। পরে গত ২৬ জুলাই এই শাস্তি ‘যথোপযুক্ত নয় উল্লেখ করে পুনরায় শাস্তি নির্ধারণে উপাচার্য কে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আগামী ২৩ আগস্ট আদালতে এসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়।