দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক: হাইকোর্ট বলেছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫২ বছর। এই সময়ে অনেক রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছে, আবার বিদায়ও নিয়েছে। কিন্তু শত বছরের পুরোনো জেলকোড সংশোধন করেনি। নাশকতার মামলায় গ্রেফতার যুবদল নেতা কলেজের শিক্ষককে ডান্ডা-বেড়ি পরানোর ঘটনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়েরকৃত রিটের শুনানিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোবাবর এই মন্তব্য করে।
রিটকারী পক্ষের কৌসুলি অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, জেলকোড ১০০ বছরের পুরোনো। কিন্তু এই আইনে কোনো ধরনের সংশোধন করা হয়নি আজও। এ পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, আপনারা (রাজনীতিবিদ) তো জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে সংসদে যান। কিন্তু মানুষের কল্যাণে কতটুকু কাজ করেন? দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু আজও কেন জেলকোড সংশোধন করে যুগোপযোগী আইনে পরিণত করতে পারলেন না? তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের সংস্কৃতি তো ভিন্ন। সংবিধানে মৌলিক অধিকারের কথা বলা হলেও তা আইন দ্বারা নির্ধারিত।'
এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির মধ্যে মানবসত্তার মর্যাদা রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু এই কলেজ শিক্ষককে ডান্ডা-বেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সেই চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনকি একটি মামলায় জামিন পেলেও তাকে অন্য মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, এই সরকারের আমলে মৃত বা হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। সানাউল্লাহ মিয়া কয়েক বছর আগে মারা গেলেও তাকে নাশকতার মামলার আসামি করা হয়েছে। সরকার প্রতিনিয়তই সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন করে চলেছে। আদালত বলে, ডান্ডা- বেড়ি কোন ধরনের আসামিকে পরানো যাবে, সেই বিষয়ে অ্যাপেক্স কোর্টের গাইডলাইন রয়েছে। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ সোমবার আদেশের জন্য দিন ধার্য রেখেছে। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেফতারকৃত যশোর যুবদলের নেতা আমিনুল ইসলাম মধুকে ডান্ডা-বেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঐ প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।