ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। শিক্ষকদের নির্দেশে এসব বাগান পরিচর্যার সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে এসব বাগানের গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে। বাগানের এসব ফল, সবজি দেখে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষার্থীরা।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমার উদ্ভাবনী আইডিয়া থেকে উপজেলার ৫৪টি বিদ্যালয়ে এসব পুষ্টি বাগান গড়ে উঠেছে। এর লক্ষ্য ছিলো ছাত্র-ছাত্রীদের মনে শুভ চিন্তার প্রতিফলন ঘটানো। সরেজমিনে সোমবার পৌরশহরের দেবগ্রাম, তারাগন, মোগড়া ও আমোদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুষ্টি বাগান দেখা গেছে। বাগানে পেঁপে, ঢেড়শ, কাঁচা মরিচ, পুইশাকসহ বিভিন্ন ফল ও সবজি চাষ করা হয়েছে।
দেবগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকা খাতুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কয়েক মাস আগে বিদ্যালয়ের কাব শিশুদের নিয়ে পুষ্টি বাগান করা হয়েছে। বাচ্চারা নিজের হাতে গাছ লাগানো এবং পরিচর্যা করা শিখছে। কিছু পেঁপে আমরা খেয়েছি, ছাত্রদেরও দেবো।
তারাগণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৌসুমী আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন এক ইঞ্চি জায়গাও যেন অনাবাদি না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশে ইউএনও স্যার আমাদেরকে বিদ্যালয়ে পুষ্টি বাগান করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন। শিক্ষা অফিসার স্যারের সার্বিক তদারকিতে আমরা বিদ্যালয় মাঠের এক পাশে পুষ্টি বাগান করেছি। কাব স্কাউট ও কাউন্সিল সদস্যরা বাগানের পরিচর্যা করে। এসব বাগান দেখে ছাত্র-ছাত্রীরা গাছ লাগানো ও সবজি বাগান করার ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুষ্টি বাগান করা ইউএনও অংগ্যজাই মারমা স্যারের একটি উদ্ভাবনী আইডিয়া। তিনি জেলা সমন্বয় সভার কাব মিটিংয়ে আখাউড়া উপজেলার প্রত্যেকটি সরকারি বিদ্যালয়ে সামাজিক পুষ্টি বাগান করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন। সেই লক্ষ্যে উপজেলার ৫৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসব বাগান তৈরি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বাগানে বিভিন্ন প্রকার পুষ্টিকর ফল ও সবজি চাষ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজ হাতে বাগান করা, কাজ করার মানসিকতা জাগ্রত হবে, পরিশ্রমী হয়ে উঠবে।
জানতে চাইলে আখাউড়া উপাজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, উপজেলার ৫৪টি স্কুলে পারিবারিক পুষ্টি বাগান তৈরি করা হয়েছে। এর উদ্দেশ হলো স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে পুষ্টি বাগানের প্রয়োজনীয়তা শিশুর মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একটি শুভ চিন্তার প্রতিফলন ঘটানো। এই বাগানের উৎপাদন হয়তো সীমিত হবে। কিন্তু এর বার্তা সুদূর প্রসারী।
তিনি আরো বলেন, আমাদের অনেকের বাসা বাড়িতে অনাবাদি জমি পতিত অবস্থায় থাকে, ব্যবহার হয় না। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের বাড়ির আঙিনায় কোনো জায়গা খালি পড়ে থাকলে তা কাজে লাগাতে পারবে। এর মধ্যে দিয়ে তাদের দেহ ও মন সুস্থ থাকবে। পারিবারিক সমৃদ্ধি অর্জিত হবে। তাছাড়া, ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের নির্দেশনায় দলগতভাবে কাজ করবে। এর মধ্যে দিয়ে তারা শিখবে যে, ব্যক্তিগত অর্জনের চাইতে দলগত অর্জন অনেক বেশি ফলদায়ক।