বিধি অনুযায়ী উপজেলা সদরের সরকারি বিদ্যালয়ে পদে সংখ্যা ২৭ হলেও সুনামঞ্জের তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পদসংখ্যা ১২ জন। ৬১০ শিক্ষার্থীর এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে কর্মরত আছেন সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ৬ জন। গত দু’বছর ধরে গণিত শিক্ষকের পদটি শূন্য। শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় পাঠদান থেকে বঞ্চিত। বিদ্যালটির দ্বিতীয় শাখা না থাকায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে সরকারি নিয়মানুযায়ী ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে না। উপজেলা সদরে আর কোনো উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীই ঝরে পড়ে। বিদ্যালয়ের ছাত্রসংখ্যা অনুযায়ী প্রতিটি শ্রেণিতে দুটি শাখা খোলা যায়। শিক্ষক সংকটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। অফিস সহকারী ও নৈশপ্রহরীর পদও রয়েছে শূন্য।
১৯৫০ খিষ্টব্দে প্রতিষ্ঠিত তাহিরপুর বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৮৭ খিষ্টব্দে জাতীয়করণের পর থেকে কোনো প্রধান শিক্ষক ছিলেন না। ২০১৬ সালে কিছুদিনের জন্য একজন প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন। এর পর থেকে আর কোনো প্রধান শিক্ষক যোগদান করেননি।
পাতারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাদিউজ্জামান জানান, তাঁর ছেলে তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেও সেখানে শিক্ষক সংকট থাকায় অন্যত্র ভর্তি করিয়েছেন।
তাহিরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সালেহা আক্তার সেবিকা জানান, এখানকার শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে যাবে কোথায়– এ নিয়ে তিনি চিন্তিত। বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক জাহিদ কামাল বলেন, ৪১তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে ৩ জন শিক্ষক তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য মনোনীত হয়েছেন। বিধিমালা অনুসারে উপজেলা সদরে মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৭ জন শিক্ষকের পদায়ন রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট সমাধানে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফয়জুল হুসাইন জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শাখা খোলার বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে তা সম্ভব নয়। ৪১তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে ৩ জন শিক্ষক আগামী ২৩ জুন যোগদানের কথা। তারা এখানে যোগদান করবেন কিনা– এখনও তাঁকে নিশ্চিতভাবে জানানো হয়নি।
তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সব শূন্য পদ পূরণ করা জরুরি। বিদ্যালয়ে শাখা খোলার বিষয়ে তিনি বলেন, হাওরাঞ্চলে শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে শাখা খোলা খুবই দরকার। বিদ্যালয়ের ছাত্র অনুপাতে সব শ্রেণিতে তিনটি শাখা খোলা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এলাকার অভিভাবকদের চাহিদা অনুযায়ী মতামতসহ প্রস্তাব অনুমোদনে প্রধান শিক্ষককে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানাতে হবে।