৭ বছর ডাবল এমপিও ভোগ করে ফাঁসলেন উপাধ্যক্ষ!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রায় ৭ বছর ধরে দুই পদের জন্য বেতনভাতার সরকারি অংশ ভোগ করে ফেঁসে গেছেন বেসরকারি কলেজের এমপিওভুক্ত এক উপাধ্যক্ষ। তিনি ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করার পরেও আগের সহকারী অধ্যাপক পদের এমপিও ভোগ করছিলেন। এভাবেই দুই পদের জন্য প্রায় ৭ বছর ধরে এমপিও ভোগ করেছেন তিনি।

যদিও এমপিও নীতিমালা সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, কোন এমপিওভুক্ত শিক্ষক একাধিক পদের জন্য বেতন ভাতা নিতে পারবেন না। বিষয়টি নজরে এনেছে শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, উপাধ্যক্ষের এমপিও বন্ধ করা হতে পারে। একইসাথে উপাধ্যক্ষকে অতিরিক্ত দেয়া টাকা ফেরত নেয়া হবে। এর প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।  

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলাধীন দল্টা ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যাপক এ এ এম মোস্তাক আহম্মেদ দুই পদের জন্যই এমপিও ভোগ করছেন। সম্প্রতি কলেজের একজন শিক্ষকের করা অভিযোগে বিষয়টি নজরে আনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, মোস্তাক আহম্মেদ কলেজের সহকারী অধ্যাপক পদে আগে এমপিওভুক্ত ছিলেন। পরে উপাধ্যক্ষ পদে তিনি ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ পান। কিন্তু আগের পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেননি। দীর্ঘ ৭ বছর দুই পদে এমপিও ভোগ করেছেন উপাধ্যক্ষ। কলেজের একজন শিক্ষক এ বিষয়ে অভিযোগ করলে শিক্ষা অধিদপ্তর তাকে শোকজ করে। শোকজে উত্তরে বিষয়টি শিকার করেছেন তিনি। তবে, কলেজের অধ্যক্ষ দাবি করেছেন, গভর্নিং বডির চাপে তিনি পদত্যাগ না করেই উপাধ্যক্ষ পদে যোগ দিয়েছেন। আর গভর্নিং বডি বলছে উপাধ্যক্ষ দুই পদের বেতনভাতা নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। 

এদিকে ৭ বছর ধরে ডাবল এমপিও ভোগ করা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর। তার বেতন ভাতার সরকারি অংশ বা এমপিও বন্ধ করা হবে। একইসাথে অতিরিক্ত নেয়া টাকা ফেরত নেয়ার হবে। এর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অধিদপ্তর থেকে উপাধ্যক্ষ মোস্তাক আহম্মেদকে শোকজ করা হয়েছে।  

শোকজ নোটিশে অধিদপ্তর বলছে, জনবল কাঠামো ২০১৮ এর ১১.১০ এর (কও ) ধারা লঙ্ঘণ করায় ১৮.১ ধারা মোতাবেক তার বেতন ভাতা বন্ধ ও উপাধ্যক্ষ পদে যোগদানের তারিখ থেকে সহকারী অধ্যাপকের সরকারি বেতন ভাতা কেন ফেরৎ নেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা তার ব্যাখ্যা দিতে উপাধ্যক্ষ এ এ এম মোশতাক আহমেদকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) রাতে কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। শিক্ষা অধিদপ্তর যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমি সে সিদ্ধান্ত মেনে নেবো। 

যদিও শোকজের জবাবে অধ্যক্ষ দাবি করেছেন, ‘আমি গভর্নিং বডির চাপে তাকে পূর্ব পদের পদত্যাগ ছাড়াই যোগদান পত্র গ্রহণ করতে বাধ্য হই। তিনি দুইটি পদেই নিয়োজিত আছেন এবং দুই পদের বিপরীতে প্রতিষ্ঠান থেকে ভাতা গ্রহণ করেন।’

যদিও শোকজের জবাবে কলেজের গভর্নিং বডি শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানিয়েছে, উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার পর যোগদান করতে হলে তাকে বিধি মোতাবেক সহকারী অধ্যাপকের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়। কিছু পদত্যাগ না করে তিনি উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন এবং আগের গভর্নিং বডি তার যোগদান অনুমোদন করেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করে তিনি সরকার প্রদত্ত সহকারী অধ্যাপকের বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন এবং সাথে সাথে সহকারী অধ্যাপক উপাধ্যক্ষের প্রাতিষ্ঠানিক বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। বিধি মোতাবেক একই ব্যক্তি দুটি লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকতে পারেন না। তার দুটি পদে থাকা ও আর্থিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করার কারণে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে উপাধ্যক্ষ নিয়োগের সময় স্থানীয় এমপি কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলেন। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE   করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055441856384277