চলতি বছরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে বয়স একটি মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে বাকযুদ্ধ হচ্ছে। এর মধ্যেই একজন আরেকজনকে ‘বুড়ো’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ‘বুড়ো’ বলে আক্রমণ করেন ট্রাম্প। শুক্রবার (১৪ জুন) রাতে নিজের ৭৮তম জন্মদিনে ফ্লোরিডায় ভাষণ দেয়ার সময় এ কথা বলেন ট্রাম্প।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ফ্লোরিডায় ভাষণ দেয়ার সময় বাইডেনকে বুড়ো বলার পাশাপাশি তার দলকে বেসামাল বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে নিজের প্রতিপক্ষকে ‘দুর্বল’ বলেও আখ্যা দেন তিনি।
উল্লেখ্য, বয়সের হিসেবে জো বাইডেনের চেয়ে তিন বছরের ছোট ট্রাম্প।
ফ্লোরিডায় দেয়া ভাষণে রিপাবলিকান পার্টির ট্রাম্প বলেন, আমাদের দেশ অযোগ্য লোকদের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সব প্রেসিডেন্টের যোগ্যতা পরীক্ষা করা উচিত। এ সময় তিনি জো বাইডেনকে নিয়ে বিভিন্ন রসিকতাও করেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ফ্লোরিডায় নিজের জন্মদিন জমকালো আয়োজনে উদযাপন করেন ট্রাম্প। তার পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়, আমেরিকার এ যাবৎকালের শ্রেষ্ঠ প্রেসিডেন্টের জন্মদিন উদযাপনে আমাদের সঙ্গে যোগ দিন। আয়োজনে অতিথিদের মার্কিন পতাকার আদলে পোশাক পরে আসতে বলা হয়। ওড়ানো হয় লাল-নীল বেলুন। ট্রাম্প মঞ্চে উঠে এলে সবাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে গান গাওয়া শুরু করেন।
বাইডেনও অবশ্য প্রতিপক্ষকে খোঁচা দিয়ে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেছেন, শুভ ৭৮তম জন্মদিন, ডোনাল্ড। এক বুড়োর কাছ থেকে আরেক বুড়ো জন্মদিনের শুভেচ্ছা নিন। বয়স শুধু একটি সংখ্যা।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাইডেন। তার বয়স ৮১। নভেম্বরের নির্বাচনে যদি ট্রাম্প জয়ী হন, সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি শপথ নেবেন।
তবুও তার প্রচারশিবির থেকে প্রায় প্রতিদিন বাইডেনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হোঁচট খাওয়া বা কথা বলার সময় ভুলে যাওয়ার মতো নানা বিষয় নিয়ে ভিডিও প্রকাশ করা হয়ে থাকে। তাদের দাবি, বাইডেন যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যকর নন, এসব ভিডিও তারই প্রমাণ। কিন্তু ট্রাম্প শিবিরের এসব ভিডিওর বেশিরভাগ সম্পাদনা করা ও বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল নেই।
ট্রাম্পের বয়স নিয়েও ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বাইডেন শিবির থেকেও তার বয়স নিয়ে কথা উঠছে। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারবিষয়ক প্রভাষক ম্যাথু ফস্টার বলেন, শারীরিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে দুজনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পার্থক্য চোখে পড়ে। কারণ, বাইডেনের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষেত্রে কাজের সময়ের ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তিনি জনসমক্ষে বেশি থাকেন। যখন সমর্থকদের সামনে ভাষণ দেন তখন দীর্ঘক্ষণ, অসংলগ্ন অনেক আবেগনির্ভর কথাবার্তা বলেন ট্রাম্প।
এ ছাড়া ট্রাম্প মিডিয়ায় নিজের একটি তরুণ ইমেজ তৈরিতে যথেষ্ট তৎপর। তিনি নিজেকে তরুণ দেখাতে অতিমাত্রায় কসমেটিকস এবং হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করছেন। এর ফলে দূর থেকে তাকে অধিকতর তরুণ দেখায় বলে অনেকে মনে করছেন।
আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যিনি জয়ী হবেন, তিনিই হবেন সবচেয়ে বয়স্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কারণ, ট্রাম্প ও বাইডেন দুইজনের চেয়ে বেশি বয়সে আর কেউ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হননি।