৯ বছর ধরে নিয়মিত অধ্যক্ষ নেই ডুমুরিয়া কলেজ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষরাই গত ৯ বছর খুলনার এ কলেজটি পরিচালনা করছেন। অধ্যক্ষের শূন্যপদে ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগের বিধান না মেনেই তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির ৯টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করায় জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
কলেজ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে কলেজের সর্বশেষ নিয়মিত অধ্যক্ষ এস এম গোলাম হায়দার অবসরে যান। তার অবসরের পর উপাধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ মে পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তিনিও অবসরে গেলে সিনিয়র শিক্ষক ধ্যানেশ কুমার গোস্বামী ২০১৯
চলতি বছরের ২৫ জুন জারি করা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়ার ১ বছরের মধ্যে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বাক্ষর করা কাগজপত্রে ও কার্যবিবরণী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বীকৃত বা গৃহীত হবে না।
কলেজের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগের কোনো উদ্যোগ না নিয়ে বিশেষ স্বার্থে গত ২০ জুলাই কলেজের পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ল্যাব অ্যাসিসট্যান্ট, ২ জন কম্পিউটার অপারেটর, ২ জন অফিস সহায়ক ও নৈশপ্রহরী মোট ৯টি পদের জন্য দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
কলেজের একটি সুত্রের দাবি, কলেজের একটি বিশেষ গোষ্ঠী চায় না অধ্যক্ষ নিয়োগ হোক। তাই দীর্ঘদিন ধরে কোনো না কোনোভাবে অধ্যক্ষের নিয়োগ পাশ কাটিয়ে কোটি টাকা বাণিজ্যের আশায় তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির ৯টি পদের নিয়োগ দিতে ব্যস্ত।
কলেজ গভার্নিং বডির সদস্য হাজিডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সিরাজুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি মিটিংয়ের দিন সবার আগে কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি তুলেছিলাম। কিন্তু নেতারা অজ্ঞাত কারণে আগে ওই ৯ পদের নিয়োগ চান।
ডুমুরিয়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ৬ মাসের বেশি দায়িত্ব পালন না করতে পারা বা অধ্যক্ষ নিয়োগ সংক্রান্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ চিঠি সম্পর্কে সম্প্রতি জানতে পেরে কলেজ সভাপতিকে বলেছি, আগে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগ করতে হবে। তারা এসেই অন্য পদে নিয়োগ দেবেন।
জানতে চাইলে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপিত খান আতিয়ার রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনেক ভালো লোক। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কথা বলে তাকে অধ্যক্ষ নিয়োগ পর্যন্ত রেখে দিতে চাই। ৯টি পদে নিয়োগের মধ্যে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের নিয়োগ হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ৬ মাসের অধিক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ না থাকার নিয়ম থাকলেও প্রায় ১০ বছর ধরে ডুমুরিয়া কলেজে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলার কথা জানতে পেরে কলেজে একটা চিঠি দিয়েছি। আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করছি।