৯৩ বছর বয়সে স্কুলে ভর্তি হলেন সলিমা

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

যে সময়ে নাতি-নাতনিদের নিয়ে নিজ ঘরে আরাম-আয়েশ ও বিশ্রামে থাকার কথা, সে বয়সে স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাসে বসে বই খুলে করছেন পড়াশোনা। আলোচনায় উঠে আসা সেই নারীর নাম সলিমা খান।

যার কাছে বয়স শুধুই সংখ্যা, আর সেই কথার জীবন্ত প্রমাণ হলেন উত্তর প্রদেশের ৯৩ বছর বয়সী এ নারী। নিজের জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে বয়সের ভার, শারীরিক দুর্বলতা সবকিছু যেন পেছনে ফেলে আবারও স্বপ্ন দেখছেন অপূর্ণ স্বপ্নটাকে বাস্তবে রূপ দিতে।

বুলন্দশহরের একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাসে তাকে দেখা যাচ্ছে একদম ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সঙ্গে, কাঁধে বই ব্যাগ নিয়ে তিনি যেন ফিরে এসেছেন সেই ছোটবেলার পড়াশোনার দিনগুলোতে।

সলিমা খানের ইচ্ছাটা ছিল ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু সময়ের অভাবে, পারিপার্শ্বিকতা আর পারিবারিক চাপে সেই স্বপ্নকে সারা জীবন দমিয়ে রেখেছিলেন। অবশেষে, পরিবারের সহযোগিতায় তিনি আবার স্কুলে ফিরেছেন।

তিনি তার জীবনের গল্প তুলে ধরে বলেন, আমি সবসময় শিখতে চাইতাম। পরিবারের লোকজনকে বলতাম। একদিন আমার ভাই পরামর্শ দিলেন, স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা কর। শিক্ষকরা তোমাকে শেখাবে। আমি সেই কথা শুনে দারুণ খুশি হয়েছিলাম আর স্কুলে আসি।

ক্লাসরুমে তার উপস্থিতি যেন অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করে। বাচ্চারা তাকে শেখায়, আর তিনিও তাদের শেখান। তিনি খুবই আনন্দিত এই নতুন যাত্রায়।
তিনি বলেন, `আমি এই স্কুলের বাচ্চাদের খুব ভালোবাসি। এখানে এসে খুব ভালো লাগে।

সলিমা খানের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, ড. প্রতিভা শর্মা, তাকে ‘নতুন ভারত সাক্ষরতা মিশন’-এর আওতায় গ্রামের পরিষদের স্কুলে ভর্তি করান।
ড. শর্মা জানালেন, সলিমা খানের চোখে ছানি, কানে শুনতে অসুবিধা, কিন্তু তা সত্ত্বেও তার পড়াশোনার ইচ্ছা অবর্ণনীয়। তিনি যেন একেবারে শিশুর মতো শিখতে পছন্দ করেন, কবিতা আবৃত্তি করতে ভালোবাসেন, আর বাচ্চাদের সঙ্গে মিলে পড়াশোনা করতে খুব আনন্দ পান।

সলিমা খান শুধু নিজেই শিক্ষার পথে হাঁটছেন না, তার প্রভাব পড়েছে গ্রামবাসীর ওপরও। তার দুই পুত্রবধূসহ আরও অনেক নারীও এখন সাক্ষরতা ক্লাসে ভর্তি হয়েছেন।
সলিমা খানের এই গল্পটা সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে শেখার কোনো বয়স হয় না। বয়স যদি তিরানব্বইও হয়, ইচ্ছেটাই আসল।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.014297008514404