বর্তমানে বিএনপির চলমান আন্দোলনে ছাত্রদলের ভূমিকা প্রত্যাশাপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল উত্তরাঞ্চলের সাবেক ও বর্তমান নেতারা।
আমির খসরু মাহমুদ বলেন, অনেকেই মনে করছেন বর্তমানে চলমান যে আন্দোলন সেখানে ছাত্রদলের ভূমিকা প্রত্যাশা পূর্ণ নয়। বাংলাদেশের জনগণ এবং দলের মধ্যে এ বিষয়টা কাজ করছে। প্রত্যাশিত রেজাল্ট ছাত্রদল এখনো দিতে পারেনি। এ সত্য কথা আমাদের বলতে হবে। বিএনপির এ ক্রান্তিকালে ছাত্রদলের প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
আমাদের যুদ্ধ আমাদেরই করতে হবে বিদেশি শক্তিগুলো সহায়ক হিসেবে কাজ করবে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বিদেশিরা অনেক দিক থেকে আমাদের সমর্থন দিচ্ছেন। দুইদিন আগেও বাংলাদেশের বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন নিয়ে জাতিসংঘ দীর্ঘ বিবৃতি দিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো, আমেরিকান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সবাই দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারা ততক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকবে। যতক্ষণ আমরা রাজপথে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করব। বাংলাদেশে এসে তারা (বিদেশিরা) কেন আমাদের যুদ্ধ লড়তে যাবেন। আমাদের যুদ্ধ আমাদেরই করতে হবে শুধু সহায়ক শক্তিগুলো এগিয়ে আসবে।
নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কিছু নেই উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মনে একটি প্রশ্ন নিরপেক্ষ নির্বাচন। এর বাইরে বাকি আলোচনায় যাওয়ার আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। সরকারের মন্ত্রীরা বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা এসবের কোনো উত্তর দিচ্ছি না। জনগণ নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এটা আমাদেরও দাবি। আমরা এর বাইরে কোনো আলোচনা করব না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া আগামীতে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শুধু মাত্র ছবির তোলার জন্য কোন পদ যাত্রা করা যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ৫১টি থানায় বিশালভাবে পদযাত্রা হতে হবে। এটা হবে আগামী দিনের শেখ হাসিনার পদত্যাগের সিগন্যাল। যদি সুষ্ঠুভাবে পদযাত্রা করতে পারেন তাহলে আগামী দিনের শেখ হাসিনার পতনের প্রথম ধাপ পার হয়ে যাবেন আপনারা। আর এর পরবর্তী কর্মসূচিতে দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। আর এখন কিন্তু পদ নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। সত্যি কথা বলতে কি, আপনি টিকে থাকলেই তো তারপর পদ। এরকম একটা ফ্যাসিস্টের যদি পতন ঘটাতে না পারি, তাহলে আপনি পদ দিয়ে কি করবেন। দেশের মানুষকে বার্তা দিতে হবে, আমরা প্রস্তুত আপনার (জনগণ) মাঠে নামেন।
সভার সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। সভা সঞ্চালনা করেন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা রকিবুল ইসলাম বকুল।