বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এক আবেগ ও ভালোবাসার নাম। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি। এবার তার ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটি রিমেক করে বিতর্কের মুখে পড়েছেন অস্কারজয়ী বলিউড গাংক এ আর রহমান। দেশাত্মবোধক গানের সুর বিকৃত করার কারণে গত কয়েকদিন ধরে দুই বাংলাতেই শুরু হয়েছে শোরগোল।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ‘পিপ্পা’ সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে এ আর রহমানের রিমেক করা গানটি। আর সেই গানটির বিরুদ্ধেই এখন রুখে দাঁড়িয়েছে দুই বাংলার সংগীত প্রেমীরা।
বিকৃত সুর কাণ্ডে এ আর রহমান যখন নানা সমালোচনা ও চর্চার মুখে, তখন অনেকটা চাপের কারণেই ক্ষমা চাইল ‘পিপ্পা’ সিনেমা টিম। দায়সারা ভাবে ক্ষমা চেয়ে বিতর্ককে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে প্রযোজনা সংস্থা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, প্রযোজনা সংস্থা রয় কাপুর ফিল্মস সোশ্যালে এক বিবৃতেতে বলে, কপি রাইট সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়ম-বিধি মেনেই গানটি নিয়ে কাজ করা হয়েছে। অনুমতি নিয়ে তবেই গানটি রিমেক করেছেন সংশ্লিষ্টরা। কাজী নজরুল ইসলামের উত্তরসূরীরা ‘পিপ্পা’ সিনেমার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আরও জানায়, প্রয়াত কল্যাণী কাজী (কাজী নজরুল ইসলামের পুত্রবধু) চুক্তি করেন তাদের সঙ্গে।
এর সাক্ষী অনির্বাণ কাজী। কাজী নজরুল ইসলামের লেখা অপরিবর্তিত রেখে নতুন সুর দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে চুক্তিপত্রে।এছাড়া কাজী নজরুল ইসলামের সুর করা গানের প্রতি দুই বাংলার মানুষের যে আত্মিক টান রয়েছে, সেটি স্বীকার করে প্রযোজনা সংস্থা বলে, কাজী নজরুল ইসলামের আসল সুরের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে আমাদের। ভারতীয় উপমহাদেশে সংগীত জগতে, সমাজ ও রাজনীতিতে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতা, শান্তি ও ন্যায়ের জন্য যারা সংগ্রাম করেছিলেন, তাদের সম্মান জানাতেই তৈরি হয়েছে অ্যালবামটি।
সবশেষ আরও জানানো হয়, অরিজিনাল সুরের প্রতি শ্রোতাদের যে আত্মিক টান রয়েছে, সেটি বুঝতে পেরেছি আমরা। তবে শিল্প সর্বদাই ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখার বিষয়। আমাদের কাজ যদি কারও ভাবাবেগে আঘাত দেয় কিংবা কোনো সমস্যার সৃষ্টি করে, তাহলে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।