রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আর্ট গ্যালারিতে গত ১০-১১ মার্চ হয়ে গেলো ‘দি প্যাসেজ অফ টাইম’ শিরোনামে ড. খন্দকার অমিতাভ নোবেল-এর দুইদিনব্যাপী একক স্থিরচিত্র প্রদর্শনী। এছাড়া একই শিরোনামে তার একক স্থিরচিত্র বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়।
গত ১০ মার্চ (শুক্রবার) বিকালে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আর্ট গ্যালারিতে শুরু হয়। বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত শিল্প সমালোচক, অনুবাদক অধ্যাপক ড. আব্দুস সেলিম, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাকিব আহম্মেদ, ড. খন্দকার অমিতাভ নোবেলের পিতা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খন্দকার মোজাম্মেল ও মাতা লেখক, উপস্থাপক মিতালী হোসেন, দৈনিক মানবজমিনের বার্তা সম্পাদক কাজল ঘোষ।
প্রদর্শনীর স্থিরচিত্রগুলো দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিলো ড. খন্দকার অমিতাভ নোবেল-এর প্রতিটি ছবি যেন এক একটি জানালা। যে জানালায় চোখ রাখামাত্র হারিয়ে যাওয়া যায় পৃথিবীর পথ থেকে পথে। ‘দি প্যাসেজ অফ টাইম’–এর স্থিরচিত্রগুলো প্রজন্মের পরিভ্রমণ হয়ে ওঠে। মেধাবী শিক্ষার্থী নোবেল-এর ছোটবেলা থেকেই ফটোগ্রাফির প্রতি ভালো লাগা ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সেই ভালো লাগাটাই ভালোবাসায় রূপান্তরিত হলো। পরবর্তীতে কর্মসূত্রে পৃথিবীর পাঠশালায় বিশ্বপরিব্রাজক হয়ে ওঠার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নান্দনিকতার বোধের জাগরণে তোলা স্থিরচিত্রগুলো স্বপ্নের আলো জ্বালানোর প্রতিবিম্ব হয়ে ধরা দেয়, জীবনকে ভালোবাসার আর আশার কথাগুলোই যেন বলে। যে আশাবাদ নিয়েই শিল্পচর্চায় জীবন এগিয়ে যায়। নোবেলের স্থিরচিত্রে আশাগুলো অন্তরের ভেতরের বিজলি বাতির মতো হয়ে ওঠে। এটাকে জ্বালিয়ে রাখার মধ্য দিয়ে বিশ্বময়ীর বিশ্ব মায়ের আঁচলখানি খুঁজে পাওয়া যায়।
আর তাই মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ড. খন্দকার আমিতাভ নোবেল তার প্রকাশিত বই নিয়ে যথার্থই বলেন, ‘আমাদের যাপিত জীবনে সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। জীবনের প্রতিটি পর্যায় সময় ছাপ রেখে যায়। আসলে সময়কে নিয়ে আমরা সেভাবে চিন্তা করি না। নানা কারণেই সময়কে ধারণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে আমি আমার এই বইতে আমার দেখা সময়গুলোকে দেখিয়েছি আমার স্থিরচিত্র ও লেখার মধ্যে। এসব হয়ত আপনাদের যাপিত জীবনে সামান্য হলেও সময় নিয়ে চিন্তার খোরাক জোগাবে।’ দুইদিনব্যাপী তার একক স্থিরচিত্র প্রদর্শনীতে ঠাঁই পাওয়া ছবিগুলো সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন সময় পরিবারের সাথে ঘোরাঘুরির মধ্যে তোলা রঙিন ছবিগুলো আপনাদের ভালো লাগবে। এসব ছবি সাধারণত মানুষ তাদের বাসায় রাখতে চান। এই ছবিগুলোতেও সময়কে ধারণ করা হয়েছে।’
আনুষ্ঠানিকতার আগে আগত অতিথিরা স্থিরচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লেডিস সার্কেল বাংলাদেশের সভাপতি মৌটুসী খন্দকার। শুরুর দিন সন্ধ্যায় স্থিরচিত্র প্রদর্শনীটি দেখতে আসেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব, ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার (অপু), সমাজ কল্যাণ সম্পাদক তৌফিকা আহম্মেদসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। মোড়ক উন্মোচন ও স্থিরচিত্র প্রদর্শনীটি যৌথভাবে আয়োজন করে লেডিস সার্কেল বাংলাদেশ ও প্রকাশনা ডট কম। আয়োজনটিতে আর্থিক পৃষ্টপোষকতা করে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ফোন ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবা নগদ এবং ই-পাঠাশালা নামক একটি প্রতিষ্ঠান।