দেশপ্রেমিক হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল ইসলাম চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেছেন, আমাদের এখন কর্মমুখী শিক্ষা প্রয়োজন। একইসঙ্গে দেশপ্রেমিক ও ইতিহাসবোধসম্পন্ন সত্যিকারের বাঙালি হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষকরা জাতির বাতিঘর, তাদেরকেই এক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।
সোমবার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ আলোচনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে হয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তরুণদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে তিনি সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
উপমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে হত্যাযজ্ঞের সূচনা করেছিলো, একেবারে শেষ দিকে এসে পরাজয়ের আগ-মুহূর্তে তা রূপ নেয় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তা তখন তাদের এ দেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় বেছে বেছে হত্যা করেছিলো জাতির অগ্রণী শিক্ষক, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার প্রথিতযশা ব্যক্তিদের। এসব হত্যার কারণটি স্পষ্ট, পরাজয় নিশ্চিত জেনে তারা চেয়েছিলো স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাওয়া দেশটিকে মেধায়-মননে পঙ্গু করে দিতে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম যথাক্রমে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্য আরমা দত্ত, ডা. নুজহাত চৌধুরী, তানভীর হায়দার চৌধুরী, শমী কায়সার ও রোকাইয়া হাসিনা নীলি স্মৃতিচারণ করেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে অসম্ভব দেশপ্রেম ছিলো। তরুণ প্রজন্মে বুদ্ধিজীবীদের দেশপ্রেম থেকে অনুপ্রাণিত হতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে পথ দেখাতে হবে।
বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ ও অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের এবং পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।