তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের ৭৪ বছরের পথ চলায় বাঙালি জাতির সব অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে, যার সবচেয়ে বড় অর্জন বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ে ও খাদ্যে ঘাটতি থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণতায় উন্নীত হয়েছে। বিশ্বে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই কারণে বাঙালির ইতিহাস লিখতে গেলে আওয়ামী লীগের নাম লিখতে হবে।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে দলীয়ভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ছয় দফা দাবির মধ্য দিয়ে স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন সূচনা করেন। সেই পথ ধরে ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচন ও ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু তার মূল লক্ষ্য স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেন।
তিনি বলেন, ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা যেন সেই হারানো স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্যই, যাদের নেতৃত্বে আমরা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীন হয়েছি। সে কারণে এই দিনটি বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ জাতির পিতা, মহান শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যাবে, ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে, দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হাছান মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের সূচনালগ্ন বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ঢাকার রোজ গার্ডেনে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি ও শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়েছিল। তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে আরও শাণিত করার লক্ষ্যে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নাম আওয়ামী লীগ হয়। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়, যার সভাপতি ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
স্বাধীনতাপূর্বকালেও আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির জন্য অনেক অর্জন বয়ে এনেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগ সভাপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই মূলত: ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা শহীদ দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন শুরু হয়। কারণ ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি পাকিস্তানি সরকার মেনে নিলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তা প্রতিষ্ঠা করেনি, সেটি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার।