ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের অশালীন আচরণ নিয়ে যে বিবাদ সমাধান না হলেও প্রশমিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। একই সঙ্গে আমার বিশ্বাস এ সমস্যাটা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যাবে।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের অশালীন আচরণের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে যদি দেখি তাহলে সমস্যাটা সমাধান না হলেও প্রশমিত হয়েছে। বার ও বেঞ্চের মধ্যে সম্পর্ক ভাই বোনের মতো। অন্যরকম সম্পর্ক ভাই বোনের মধ্যেও সমস্যা হয় আবার ঠিক হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ঘরের মধ্যেও কিন্তু ভাইবোনের ঝগড়া হয়, এরপর দুদিন কথা বন্ধ হয়, তিনদিনের দিন কথা শুরু হয়ে যায়। বার ও বেঞ্চের সম্পর্ক ভাইবোনের মতোই, পরিবারের মতোই, সেখানে বিবাদ হতে পারে। এ বিবাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জীবনে প্রথম হয়েছে তা নয়, এটা হয়ে থাকে আদালতে। আবার মীমাংসাও হয়ে যায়৷
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে এজলাস চলাকালে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়াসহ কয়েকজন আইনজীবী বিচারককে গালিগালাজ করছেন।
এদিকে, আইনজীবী ও আদালত কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে স্থবির হয়ে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালত। বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ, কর্মচারীদের মারধর, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আদালতের কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালনও করেন।
আপনার জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ঘটনা ঘটলো। উচ্চ আদালত এ ঘটনাকে বিচার বিভাগের অস্তিত্বের প্রশ্ন বলেছেন। একই সঙ্গে বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আগুন থামান। অন্যথায় এ আগুনে সবাইকে জ্বলতে হবে। এ বিষয়ে কী আপনার করণীয় নেই- এমন প্রশ্নে জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমাদের করণীয় নিশ্চয়ই আছে, আমি কিছু করিনি সেটা কিন্তু আপনারা বলতে পারবেন না।
কিন্তু থামছে না তো- তখন মন্ত্রী বলেন, থামছে না সে কথাটা আমি বলব সঠিক নয়, অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। আইনজীবীরা সব আদালত বর্জন করেছিলেন। বিচার বিভাগের কর্মচারীরাও ধর্মঘট করেছিলেন। এখন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে যে, আইনজীবীরা দুটো আদালত ছাড়া সব আদালতে মামলা করছেন। ওখানকার কর্মচারীরাও কাজ করছেন। এগুলো কিন্তু আমার সঙ্গে আলোচনার হওয়ার পর এ পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে।