ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ভাষা শহীদদের জীবন-কর্ম-ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে যেমন ব্যর্থ, তেমনই বাংলা ভাষার মান রাখতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। স্বাধীনতার ৫১ বছরেও ভিন্ন ভাষার সাইনবোর্ডগুলো অপসারণ করতে পারেনি তারা।
শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী পুরানা পল্টনের আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস বাংলাদেশসহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী মানুষের জন্য গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ শহীদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউর, সালাম, বরকতসহ অনেকে। আমরা তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
তিনি বলেন, মাতৃভাষা আল্লাহ্ তা’আলার মহান নেয়ামত। দ্বীনের প্রচারে মাতৃভাষায় বুৎপত্তি অর্জনের বিকল্প নেই। কারণ প্রত্যেক নবী-রাসূলকে নিজের মাতৃভাষায় আসমানি কিতাব দেয়া হয়েছে। বাংলা ভাষা আমাদের গর্ব। সুতরাং এই ভাষায় ইসলামী সাহিত্য এবং দাওয়াতের শ্রেষ্ঠ নমুনা স্থাপন করতে হবে।
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় ও ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আল-আমিন সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ।
আতিকুর রহমান মুজাহিদ বলেন, ভাষা সৈনিকদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা ও পথচলার পাথেয়। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরবর্তীতে আন্দোলন-সংগ্রামের ভীত রচিত হয়েছে। দেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে স্বাধীন পেয়েছে।
আমাদের স্বাধীনতা পরবর্তী শাসকদের উচিত ছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলাকে সর্বস্তরে প্রয়োগের মাধ্যমে ভাষা সৈনিকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। জাতির আত্মপরিচয় বিনির্মাণ করা। কিন্তু আমরা অব্যাহতভাবে লক্ষ্য করছি, এদেশের অস্তিত্বের শত্রু ভারতীয় ব্রাহ্মণ্যবাদীদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে এদেশে অবাধে আমদানি করা হচ্ছে। এটি ভাষার মর্যাদা রক্ষায় জীবন বিসর্জন দেয়া সংগ্রামীদের প্রতি উপহাসেরই নামান্তর। এর মাধ্যমে দেশের কিশোর ও যুব সম্প্রদায়ের চরিত্র ধ্বংস করার ধারাবাহিকতা আয়োজন চালানো হচ্ছে। এই জাতি বিধ্বংসী তৎপরতা যদি সরকার শিগগিরই বন্ধ না করে, তবে দেশের জাতীয় চেতনা বলে কিছু থাকবে না। এদেশের যুব শ্রেণি ও উঠতি প্রজন্মের চিন্তাধারায় দেশপ্রেমের ঘাটতি আসবে, যা দেশের জন্য স্থায়ী ক্ষতির কারণ হবে।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি শওকত ওসমান, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম নাসির উদ্দিন, দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ তসলিম উদ্দিন রুবেল, প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মাদ নাজমুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সম্পাদক এইচ এম গোলাম রাব্বি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুহাম্মাদ আবু বকর সিদ্দিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সা’দ, সংখ্যালঘু ও নৃ-গোষ্ঠি কল্যাণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, উপ-সম্পাদক মুহাম্মাদ রায়হানুল ইসলাম ও বিভিন্ন থানার নেতারা।