সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সরাপপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে দুই সহকর্মী শিক্ষিকাকে অনৈতিক প্রস্তাব ও অসাদচরণ এর অভিযোগের তদন্ত শেষে বিভাগীয় মামলা দায়ের হওয়ার পরও কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এদিকে আপোষ মীমাংসার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্কুলের ভুক্তভোগী দুই শিক্ষিকা ও সাক্ষীসহ মোট ৪জন শিক্ষকের এসিআর (গোপনীয় মতামত) স্বাক্ষর করছেন না প্রধান শিক্ষক। ফলে, উপজেলা শিক্ষা অফিসে কাগজপত্র জমা দিতে না পেরে বিপাকে পরছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলার সরাপপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে দুই সহকর্মী শিক্ষিকাকে অনৈতিক প্রস্তাব ও অসাদচরণের অভিযোগে উঠে। অভিযোগ তদন্তে সহকারী শিক্ষা অফিসার মাহমুদুর রহমানসহ ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে রিপোর্ট দেয় কমিটি। তদন্ত রিপোর্টেও সত্যতা পাওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক মুহাম্মাদ আবুল কালাম আজাদ শৃঙ্খলা বিধি ২০১৮ আইনে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা দায়ের করার ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এদিকে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী, সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের সনদ ,এসিআরসহ প্রয়োজনীয় নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেয়ার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র রায় সরাপপুর অভিযোগকারী ২ শিক্ষিকা ও সাক্ষী ২ শিক্ষকসহ মোট ৪ জনের এসিআরে স্বাক্ষর করছেন না। এসিআরে স্বাক্ষর না করায় তারা বিপাকে পড়েছেন।
সরাপপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. জহুরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র রায় আমার এসিআর স্বাক্ষর না করায় কাগজপত্র জমা দিতে পারছি না।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রধান শিক্ষক কুপ্রস্তাব দেয়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। বিভাগীয় মামলার দায়ের হলেও বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়নি। এখন তিনি হয়রানি শুরু করেছেন। এসিআরে স্বাক্ষর করছেন না।
তাড়াশ উপজেলা সহকারী সহকারী শিক্ষা অফিসার মাহমুদুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রধান শিক্ষক ভবেশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। বর্তমানে তার স্কুলের ৪জন শিক্ষকের এসিআর বইতে স্বাক্ষর করেনি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্রের মুঠোফোনে যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আকতারুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে রাজশাহী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর । বিষয়টি এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এসিআরে স্বাক্ষর না করা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাকে শিক্ষকদের এসিআর স্বাক্ষরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি এসিআর স্বাক্ষর না করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।