ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘১৪ দলীয় জোট সরকার ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় বাস্তবায়ন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু করে। বিচারের রায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির মৌলবাদী অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যার মাধ্যমে তারা অর্থপাচার ও সাম্প্রদায়িক তৎপরতা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করলেও তাদের রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করেনি।’
তিনি বলেন, ‘সরকার হেফাজতে ইসলাম নামের সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে মাথানত করে আমাদের পাঠ্যপুস্তক থেকে অসাম্প্রদায়িক লেখাগুলোকে বাদ দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাম্প্রদায়িক করা হচ্ছে। অপরদিকে, ২০১৩-১৪ খ্রিষ্টাব্দে জামায়াত ইসলামের করা হত্যাকাণ্ড ও নাশকতা মামলার বিচার এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত ৭২-এর সংবিধান বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি থাকলেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল আছে।’
শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরার শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে অনুষ্ঠিত দলীয় জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। সাতক্ষীরা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির আয়োজনে জনসভায় সভাপতিত্ব করেন- সাতক্ষীরা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মহিবুল্লাহ মোড়ল।
মেনন বলেন, ‘করোনা ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশকেও এর ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে। এসব ধাক্কা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ও রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টার চলছে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে- যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা প্রকাশ করে। কিন্তু এই উন্নয়নের ছোঁয়া গ্রামাঞ্চলের গরিব ও শ্রমজীবী মানুষ পাচ্ছে না। যাদের কারণে আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই প্রবাসী শ্রমিক, গার্মেন্টস শ্রমিক ও গ্রামের কৃষক-ক্ষেতমজুররা এই উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘দফায় দফায় তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে- যার প্রভাব পড়ছে কৃষিক্ষেত্রে ও দ্রব্যমূল্যে। কৃষি উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও তারা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তাছাড়া কৃষিতে রয়েছে বাজার সিন্ডিকেট যারা রাতারাতি ইচ্ছেমতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করছে। দ্রব্যমূল্য ও বাজার ব্যবস্থায় নেই সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ।’
ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা বলেন, ‘এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারী দেশের সম্পত্তি দখল ও লুটপাট করে বিদেশে পাচার করছে। ফলে ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও গরিবরা আরও গরিব হচ্ছে। দিন দিন ধনী দরিদ্রের ব্যবধান বাড়ছে।’