নিজের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই আশরাফুল ইসলাম (২০) কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনকে (৩০) হত্যা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম তার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এর আগে, সোমবার রাত ১১টার দিকে টেকনাফ হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির চেকপোস্টের সামনে পালকি নামে একটি বাস থেকে অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলামকে আটক করা হয়। তিনি কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকার মোহাম্মদ হাশেম মাঝির ছেলে এবং ওই এলাকার ওয়ামি একাডেমি নামে একটি মাদরাসার ছাত্র।
নিহত সাইফুদ্দিন কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত আনসার কমান্ডার আবুল বশরের ছেলে। তিনি কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।
পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান, এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনের সঙ্গে আশরাফুল ইসলামের পরিচয় হয়। রোববার বিকেলে বড় বাজার থেকে দেশীয় মদ ও পেয়ারা কিনে কক্সবাজারের হলিডে মোড়ের হোটেল সানমুনের ২০৮ নম্বর কক্ষে ওঠেন তারা। একপর্যায়ে দেশীয় মদ ও পেয়ারা খাইয়ে মাদরাসাছাত্র আশরাফুলকে যৌন নির্যাতন করেন সাইফুদ্দিন। সেই ভিডিও নিজের মোবাইলে ধারণ করেন সাইফুদ্দিন। পরে মোটরসাইকেলে করে আশরাফুলকে গোলদিঘির পাড়ে নামিয়ে ১০০ টাকা দিয়ে চলে যেতে বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, ঘণ্টাখানেক পর ফোন করে আশরাফুলকে আবারও হোটেলে ডাকেন সাইফুদ্দিন। পরে তাকে আবারও যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করা হয়। এ সময় নিজের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনকে প্রথমে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ এবং পরে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন আশরাফুল।
উল্লেখ্য, রোববার (২০ আগস্ট) রাতে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিন হোটেলের একটি কক্ষ ভাড়া নেন। পরে সোমবার (২১ আগস্ট) তার কোনো সাড়া না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ থানায় খবর দেয়। এ সময় কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ দেখতে পান তারা। পরে মরদেহটি উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান পুলিশ।