দ্বিতীয়বারের মতো ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেস গ্লোবাল এ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষামন্ত্রী আজ ২৩ নভেম্বর মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে দুদিনব্যাপী ৬ষ্ঠ ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেস চলাকালে এ এওয়ার্ড গ্রহণ করেন। মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানা গেছে। বাংলাদেশ থেকে অন্য কারা এ পুরস্কার পেয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি।
২০১২ খ্রিস্টাব্দেও তিনি একই পুরস্কার নেন। একই হোটেল থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন তিনি। ওই বছর ক্যামব্রিয়ান কলেজ ও বিদেশে ছাত্র-ছাত্রী পাঠানোর কাজে নিযুক্ত বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক -এর চেয়ারম্যান এম কে বাশার এবং বাংলাদেশ থেকে বিদেশে শিক্ষার্থী পাঠানোর অপর প্রতিষ্ঠানের মালিক সুমন তালুকদারও একই পুরস্কার নেন। সংবাদ সংগ্রহের জন্য পারিবারিকভাবে শিবিরপন্থী দুই সংবাদকর্মীকেও সঙ্গে নেয়া হয়।
চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীকে আবারও একই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেস। সংগঠনটির ভাষায় শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান, অন্যদের জীবনের জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহন এবং সামাজিক পরিবর্তনে ইতিবাচক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। দেশে ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাঁর বিভিন্ন অর্জনও মূল্যায়ন করা হয়
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিবর্তনে তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেনি পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বছরেরর প্রথম দিনেই বই তুলে দেয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত জেন্ডার সমতা অর্জন সম্ভব হয়েছে। ঝরে পড়ার হার অনেক কমেছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের অর্জন খুব বেশি নয়। সকল শিশুকে স্কুলে নিয়ে আসা এবং জেন্ডার সমতার ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন উল্লেখযোগ্য। নারী শিক্ষায় অগ্রগতি ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা বিস্তারের ফলে টারশিয়ারি পর্যায়েও বিস্তৃতির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। শিক্ষা বিস্তারের সাথে সাথে কর্মসংস্থান উপযোগী দক্ষতা অর্জনের চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত কয়েক দশকের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এবং একটি গ্লোবাল ভিলেজের নাগরিকে পরিণত করেছে বলে মন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। এ গ্লোবাল ভিলেজে শিক্ষার লক্ষ্য হতে হবে বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি অর্জন। শান্তি ও সম্প্রীতিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের ভূমিকা সবার উপরে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মানসম্মত শিক্ষা এবং আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে সকলের পারস্পরিক সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উপর তিনি জোর দেন। তিনি বলেন, শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, আমাদের শিশুদেরকে ভবিষ্যতের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করে তোলা। এ লক্ষ্য অর্জনে আমাদের শিক্ষকদের প্রস্তুত করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী তাঁকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করায় ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেসের জুরি বোর্ডের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেসের উদ্বোধন
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তাজ হোটেলে ৬ষ্ঠ ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেসের উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী প্রদীপ জ্বালিয়ে দু’দিনব্যাপী এই কংগ্রেসের সূচনা করেন। এসময় তাঁর পাশে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেস এওয়ার্ড গ্রহন করতে গতকাল মুম্বাইয়ে যান। বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীবর্গ, শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাবিদ ও শিক্ষকগণ এ কংগ্রেসে অংশ নিচ্ছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, উন্নত ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে মানবিক মূল্যবোধ শানিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় আরো জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামাজিক ও অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী কংগ্রেসে অংশগ্রহনকারী সকলকে অভিনন্দন জানান ।