কেবলমাত্র একটি শব্দের ভুল ব্যবহার। আর তাতেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে গুজরাটের নবম শ্রেণির হিন্দি পাঠ্যবই।
জানা গিয়েছে, বইটিতে যিশুখ্রিষ্টকে ‘শয়তান’ বলা হয়েছে। আর এতেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষদের। যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি ছাপার ভুল। পাশাপাশি সমস্ত স্কুল থেকে ওই বই ফেরত নিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, কীভাবে এই ভুলটি হলো, জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে গুজরাট শিক্ষা দপ্তর।
জানা গিয়েছে, বইটির ১৬তম অধ্যায়ে ভারতীয় সংস্কৃ্তিতে গুরু-শিষ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানেই যিশুখ্রিষ্টের একটি উক্তির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়, ‘এই সম্বন্ধে শয়তান ইসা’র একটি কথা সদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে (ইস সম্বন্ধ মে হেইবান ইসা কা এক কথন সদা স্মরণীয় হ্যায়)। ‘
এরপরই যিশুখ্রিষ্টের বিখ্যাত উক্তি, ‘আমার শিষ্যরা আমার থেকেও বেশি মহান এবং আমি ওদের পায়ের জুতোর যোগ্যও নই (My followers are much greater than me and I am not worthy enough to even be their shoe.)’।
যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ভুল স্বীকার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ছাপার ভুলেই এই কাণ্ড ঘটেছে। কিন্তু গোটা অধ্যায়ে যিশুখ্রিষ্টর নামের আগে ভগবান লেখা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে গুজরাটের শিক্ষামন্ত্রী ভুপেন্দ্রসিং চুড়াসামা বলেন, ‘এটা ভুল। আমরা সেটা স্বীকারও করে নিয়েছি এবং ক্ষমা চাইছি। খুব তাড়াতাড়িই ভুলটি সংশোধন করা হবে। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে তদন্তও হবে। ‘
এদিকে গোটা ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ গুজরাটের ক্যাথলিক চার্চের ফাদার বিনায়ক যাদব বলেন, ‘প্রায় আড়াই লাখ বই বিভিন্ন স্কুলে ছড়িয়ে পড়েছে। সেগুলিকে ফেরত আনাতে হবে। এটা ভুল করে হলেও, এর মাধ্যমে রাজ্যে শিক্ষার মান কোন তলানিতে এসে ঠেকেছে সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। খুঁটিয়ে না দেখে কী করে বোর্ড বইটিকে বিভিন্ন স্কুলে বিতরণ করল, যেখানে একটি সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত লাগার প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বইটিতে যিশুখ্রিষ্টর বাণীর ভুল মানে করা হয়েছে। ‘ এর পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, ‘এই সম্বন্ধে বোর্ডের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। এতেই স্পষ্ট স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে গুজরাট সরকার কতটা উদাসীন। ‘ যদিও গুজরাট স্টেট বোর্ড, শিক্ষা দপ্তরের মুখ্যসচিবকে এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানিয়েছে ক্যাথলিক চার্চ। এখন দেখার এই ঘটনার জল কতদূর গড়ায়?
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন