বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ছাত্রীদের হলে আবাসন ও পানি সংকট নিরসনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বেগম রোকেয়া হলের স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা প্রথম বর্ষের ছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের সামনের রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করেন তারা। প্রশাসন সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় হলে সিট সংকট থাকায় স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্রে ৫৭ জন ছাত্রীর থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় তাদের তিন মাসের মধ্যে হলের মূল ভবনে ওঠার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু আট মাস পেরিয়ে গেলেও হলের মূল ভবনে জায়গা পাননি ছাত্রীরা। যার ফলে স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্রে পানি সংকটসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন তারা।
এদিকে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে হলের কাজ অপূর্ণ রেখেই বেগম রোকেয়া হলে ছাত্রী ওঠানো শুরু হয়। বর্তমানে ওই হলে ১ হাজার সিটের বিপরীতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন ছাত্রী অবস্থান করছেন।
আন্দোলনকারী ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, 'স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকার ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এখানে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র পানির সংকট। বাথরুমে পানি না থাকার কারণে তিন তলা থেকে নিচে নেমে এসে পানি নিয়ে যেতে হয়, যা আমাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য কাজ। তা ছাড়া এখানে প্রতিনিয়ত রোগীদের ভিড় থাকার কারণে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এখানে কোনো ডাইনিং ও ক্যান্টিন না থাকার কারণে খাওয়া-দাওয়ার অনেক সমস্যা হচ্ছে। হলে সিট সংকট থাকায় গণরুমেও জায়গা হয়নি আমাদের। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে যেসব সুযোগ-সুবিধা আছে সেগুলো থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের সমস্যার কথা একাধিকবার প্রভোস্ট স্যারকে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। তারা শুধু আশ্বাস দিয়েই চলেছেন। আমাদের এখন একটাই দাবি সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে উঠতে চাই।'
এদিকে আন্দোলনের এক পর্যায়ে পানি সংকট ও আবাসন সংকট নিরসনে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঈশা খাঁ হলের প্রভোস্ট ড. মো. আশরাফুল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মো. শহীদুল আলম, বেগম রোকেয়া হলের হাউজ টিউটর ড. এফ.এম. জামিল উদ্দিন উপস্থিত হয়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে বেগম রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, 'স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্রে পানির পাইপে সমস্যা থাকার কারণে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি অতি দ্রুত সমাধানের কাজ চলছে। আর আবাসন সংকট নিরসনে রোকেয়া হলের চতুর্থ ও পঞ্চম তলার কাজ চলছে। নভেম্বরের মধ্যেই ওই হলের সকল ছাত্রী সিট পাবে আশা করছি।'