রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় এক ছাত্রের ডান পা ভেঙে গেছে আর মাথায় দেওয়া হয়েছে নয়টি সেলাই। আহত তরিকুল ইসলাম তারেক বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক।
তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে পতাকা মিছিল বের করলে রামদা, লোহার রড, হাতুড়ি ও বাঁশের লাঠি নিয়ে হামলা করে একদল ছাত্র। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক সুব্রত কুমারের বরাত দিয়ে আহত তারিকের সহপাঠী মতিউর রহমান বলেন, ‘তারিকের মাথায় ৯টা সেলাই দেওয়া হয়েছে। প্রচুর রক্তপাত হওয়ায় শরীর অনেক দুর্বল। ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করায় ওর ডান পা একেবারে ভেঙে গেছে। ব্যান্ডেজ করা হয়েছে; প্ল্যাস্টার করা হয়নি। অস্ত্রোপচার না করলে তার পা স্বাভাবিক হবে না। আর তার পুরো শরীরে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
সিটি স্ক্যান রিপোর্ট অনুযায়ী সুব্রত বলেন, তারিকের মাথায় বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়নি। তবে পুরোপুরি সেরে উঠতে বেশ সময় লাগবে।
মামলা দায়ের করবেন কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারিক বলেন, ‘ভাই, আমরা সাধারণ ছাত্র হয়ে আন্দোলনে এসেছি। আমরা তো কারো বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছি না। আমরা এতদিনে এসে কেন মামলা করব? আমরা আগেও সাধারণ ছিলাম, এখনও তাই। আমাদের আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ছিল না।’
তারেকের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা কৃষক। আমরা তিন ভাইবোন পড়াশোনা করি। আমাদের পড়াশোনার খরচ ঠিকমতো দিতে পারে না। তার ওপর আমার ভাইয়ের চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করা, কী হবে আল্লাহ্ জানেন!’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লুৎফর রহমান বলেন, ‘সেও তো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এখন তার বন্ধুরা মিলে যদি আর্থিক সহায়তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আবেদন করে তাহলে অবশ্যই সহায়তা করা হবে।’