কলেজ ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ যশোরে, বিচারিক তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক |

যশোরে ইমরান হোসেন নামের এক কলেজ ছাত্রকে পুলিশের নির্যাতনের অভিযোগ বিচারিক তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যুগ্ম জেলা জজ পদমর্যাদার নিচে নন, এমন বিচারিক কর্মকর্তা দিয়ে ওই ঘটনা তদন্ত করতে যশোরের জেলা ও দায়রা জজকে নির্দেশ দেWf হয়েছে।

বিচারপতি জে বি এম হাসানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট সোমবার (৬ জুলাই) এ আদেশ দেন। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

ইমরান (২৩) যশোর সদর উপজেলার কাজী নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। গত ৩ জুন যশোরে ‘পুলিশের নির্যাতনে’ কলেজছাত্রের কিডনি অকেজো বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এসব যুক্ত করে নির্যাতনের অভিযোগ বিচারিক তদন্ত চেয়ে ও ভুক্তভোগীকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির ও মোহাম্মদ কাউছার ১৮ জুন হাইকোর্টে একটি রিট দাখিল করেন।

সেই রিটের ওপর শুনানি নিয়ে ২৩ জুন হাইকোর্ট ওই শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন এবং ওই ঘটনায় পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশ দেন। এ অনুসারে যশোরের পুলিশ সুপার ওই ঘটনায় পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং সিভিল সার্জন শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন ২৮ জুন রাষ্ট্রপক্ষের মাধ্যমে আদালতে দাখিল করেন। সেদিন আদালত ইমরানের ডোপ টেস্টের রিপোর্টসহ তার চিকিৎসাসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক কাগজপত্র ৫ জুলাইয়ের মধ্যে দাখিল করতে যশোরের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন।

এ অনুসারে ইমরানের ডোপ টেস্টের রিপোর্টসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র আজ আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আবেদনকারী আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির। ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

পরে আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে ওই কলেজশিক্ষার্থীকে মাদকসেবী বলে উল্লেখ করা হয়। তখন আদালত শিক্ষার্থীর ডোপ টেস্টের রিপোর্টসহ তার চিকিৎসাসংক্রান্ত কাগজপত্র দাখিল করতে যশোরের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন।

সোমবার দাখিল করা ডোপ টেস্টের রিপোর্টে জানা গেছে ইমরান মাদকাসক্ত নন। তবে সিভিল সার্জন মতামত দিয়েছেন যে বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসাধীন থাকা এবং এখনো ওষুধ সেবন করছেন বলে ইমরানের ডোপ টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে প্রতীয়মান হয়। এমন মতামত সিভিল সার্জন দিতে পারেন না শুনানিতে বলেছি। সেই সঙ্গে পুলিশের নির্যাতনের অভিযোগ বিচারক তদন্তের আরজি জানিয়েছি। সার্বিক বিবেচনায় আদালত ওই ঘটনা বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন।

ইমরানকে উদ্ধৃত করে ইতিপূর্বে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত ৩ জুন সন্ধ্যার দিকে তিনি যশোরের চৌগাছা উপজেলার সলুয়া বাজার থেকে ইজিবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সাজিয়ালী ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ইজিবাইকটি থামান। এরপর পুলিশ তার সঙ্গে থাকা ছেলেটির ব্যাগ তল্লাশি শুরু করেন। এ সময় ভয়ে তিনি মাঠের মধ্যে দৌড় দেন। পুলিশ তাঁকে ধাওয়া করে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে গিয়ে ধরে বেদম মারপিট করে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের চিকিৎসক উবায়দুল কাদিরকে উদ্ধৃত করে তখন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ইমরান হোসেনের দুটি কিডনির কার্যকারিতা খুবই খারাপ অবস্থায় আছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036089420318604