ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় ওসির দোষ পায়নি তদন্ত কমিটি

রাজশাহী প্রতিনিধি |

রাজশাহীর শাহ মখদুম থানায় ধর্না দিয়েও স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করতে না পেরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রী লিজা রহমানের (১৯) আত্মহত্যার ঘটনায় ওসির কোনো গাফিলতি খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। তবে ঘটনাটি কেনো রেকর্ড করে রাখা হয়নি- সেজন্য শাহ মখদুম থানার ওসি মাসুদ পারভেজকে কৈফিয়ত তলবের সুপারিশ করা হয়েছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ করেছে। আরএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) সালমা বেগমের নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যের কমিটি বিষয়টি তদন্ত করেন। আরএমপি’র ‍মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জমাকৃত ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি জানান, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী লিজা রহমান তার স্বামীর দ্বারা মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অভিযোগ করতে শাহ মখদুম থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু এটি কোন ফৌজদারি অপরাধ না হওয়ায় মামলা রেকর্ড করেননি ওসি। তবে লিজাকে দুই নারী কনস্টেবলের সঙ্গে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে থানার পাশে মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গেটের সামনে লিজা নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘লিজার অভিযোগ ফৌজদারি অপরাধ নয় বলে ঘটনাটি শাহ মখদুম থানার ওসি রেকর্ড রাখেন নি। তাই তাকে কৈফিয়ত তলবের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। ঘটনাটি কেন থানায় রেকর্ড রাখা হয়নি তা জানতে চেয়ে পুলিশ কমিশনার শাহ মখদুম থানার ওসিকে কৈফিয়ত তলব করা হবে।’

নিহত লিজা রহমানের সহপাঠীরা জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর লিজা স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে যান আরএমপির শাহ মখদুম থানায়। কিন্তু অভিযোগ না নেওয়ায় ক্ষোভে ও অপমানে থানা থেকে বেরিয়ে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় লিজা।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে ওই দিনই ঢাকায় পাঠান চিকিৎসকরা। বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান লিজা। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে নিজ গ্রামে পারিবারিক গোরস্থানে লিজার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় লিজার বাবা আলম মিয়া বাদী হয়ে নগরীর শাহ মখদুম থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় তার মেয়েকে আত্মহননের প্ররোচিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় লিজার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন, তার বাবা মাহাবুবুল আলম খোকন ও মা নাজনিন বেগমকে।

এদিকে, মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার লক্ষীনারায়নপুর গ্রাম হতে লিজার স্বামী সাখাওয়াতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাখাওয়াত রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সাখাওয়াতের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার খাজুরা থান্দুরা গ্রামে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050749778747559