জটিলতার দ্রুত সমাধান চান এমপিওবঞ্চিত শিক্ষকরা

রুম্মান তূর্য |

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর মাধ্যমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়ার এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এমপিওভুক্ত হতে পারেনি। এনটিআরসিএর দ্বিতীয় চক্রে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়া এই শিক্ষকদের হতাশার মূল কারণ ভুল তথ্য দেয়া শূন্যপদে নিয়োগ সুপারিশ, মহিলা কোটা, নবসৃষ্ট পদ, প্যাটার্ন বহিভূর্ত পদে নিয়োগ সুপারিশ সর্বোপরি ভুল তথ্য দেয়া শূন্যপদে নিয়োগ সুপারিশ। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েও যোগদান করতে পারেননি অনেক প্রার্থী। দীর্ঘ অপেক্ষার পর গত ৯ জুন তাদের সকলের জটিলতা নিরসনে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু মাস পেরুলেও জটিলতা নিরসন না হওয়ায় শঙ্কিত এমপিওবঞ্চিত শিক্ষকরা। দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন তারা।

দৈনিক শিক্ষার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন তাদের জটিলতা নিরসনে কাজ চলছে। খুব শিগগিরই তাদের জটিলতা নিরসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি শিক্ষকদের জটিলতা নিরসন কোন পদ্ধতিতে করা হবে সে বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে কাজ শুরু করা হবে। আর টেলিফোন করে প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রাথমিক তথ্য ও মতামত নেয়া হচ্ছে বলেও দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা। 

আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, এনটিআরসি এর কর্মকর্তাদের সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের একটি সভা হওয়ার কথা আছে। যে সভায় সমস্যা সমাধানের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে জানাবে। তারপর ৯ জুনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভুক্তভোগীদের সমস্যা সমাধান করা হবে।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ সুপারিশ পেয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদান করে অনেক প্রার্থীই নানা জটিলতায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। প্রার্থীদের মতে শূন্যপদের ভুল তথ্য দেয়ায় এমপিওভুক্তি এসব শিক্ষকের জন্য এখন সোনার হরিণ। মহিলা কোটা ও নবসৃষ্ট পদের নিয়োগ সুপারিশ পাওয়ায় প্রার্থীরা এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। এছাড়া শূন্যপদের ভুল তথ্য দেয়া সহ নানা অজুহাতে অনেক প্রার্থী যোগদান করতে দেয়নি প্রতিষ্ঠানগুলো। 

প্রার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করে নিবন্ধিত হয়েছি। অনেক আশা করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের আবেদন করেছিলাম। সে অনুযায়ী নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছি। চাকরির শুরুর ১৬ মাস পার হলেও জোটেনি বেতন-ভাতা। এমপিওভুক্ত হতে পারিনি।

আরও পড়ুন : ‘সোনার হরিণ’ এমপিওর আশায় বছর পার ৮ শতাধিক শিক্ষকের!

মহিলা কোটা-নবসৃষ্ট পদের এমপিও জটিলতা নিরসন হবে যেভাবে (ভিডিও)

নবসৃষ্ট পদে নিয়োগ পাওয়া ভৌত বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নবসৃষ্ট পদে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়ায় আমরা এমপিওভুক্ত হতে পারিনি। কিন্তু নিয়োগ যখনই হোক সরকারি আদেশে প্রবর্তিত অর্থবছর থেকে আমাদের এমপিওভুক্ত করার আবেদন জানাচ্ছি। আমরা এনটিআরসিএর মাধ্যমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়েছি। কিন্তু ১৬ মাস এমপিওভুক্ত হতে না পেরে আমরা হতাশ। যে পদ্ধতিতেই হোক, দ্রুত আমাদের সমস্যার সমাধান চাই।

এদিকে মহিলা কোটার জন্য এমপিওভুক্ত হতে না পারা শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গত ৯ জুন শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিকল্প পদ্ধতিতে আমাদের এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন আমরা যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি সে প্রতিষ্ঠানকে পরবর্তী সময়ে মহিলা শিক্ষক নিয়োগের শর্ত দিয়ে আমাদের এমপিওভুক্ত করা যায়। আবার এমপিও জটিলতা নিরসনে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে আমাদের নতুনভাবে সুপারিশ করতে পারে এনটিআরসিএ। যেভাবেই হোক আমাদের সমস্যা সমাধান করুন। ইতোমধ্যে মাদরাসা এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক, যারা মহিলা কোটার সমস্যার জন্য এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না, তাদের নতুন করে সুপারিশ করতে এনটিআরসিএকে নির্দেশ দিয়েছে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ। কিন্তু সে নির্দেশনা অনুসারে আমাদের জটিলতা নিরসন হবে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051660537719727