ম্যানেজিং কমিটির হাতে নিয়োগ ক্ষমতার ঘোর বিরোধী নিবন্ধন প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ফের স্থানীয়ভাবে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে সব শিক্ষক নিয়োগ ভালো ফল আনবে না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা প্রার্থীরা। তারা মনে করেন, ফের কমিটির হাতে নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হলে টাকা খাওয়ার ফন্দি করা হবে। ফলে এ নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকবে না। নিয়োগ প্রক্রিয়া কমিটির হাতে ছেড়ে দিলে সমস্যা আরও বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রার্থীরা। 

উল্লেখ্য ২৭ জুন জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক সভায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থানীয়ভাবে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।  এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও একই ধরণের আলোচনা হয়।

সোমবার (২ জুলাই) শিক্ষক নিবন্ধনের ৭ম দিনের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে রাজধানী নিউ ইস্কাটনস্থ এনটিআরসিএ কার্যালয়ে। ৮টি বোর্ড গঠন করে নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪০০ প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষে নিজেদের অভিজ্ঞতার বিষয়ে দৈনিক শিক্ষার পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের বিরোধীতা করেন অনেকেই। নিয়োগ প্রক্রিয়া ও স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ সম্পর্কে মতামত প্রদানের সময় ভাইভা বোর্ডের ভয়ে নাম পরিচয় গোপন রাখেন প্রার্থীরা।

   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পরীক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, নিয়োগ হচ্ছে না এটা একটা সমস্যা। শুনছি কমিটির হাতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলে যাচ্ছে। আমার ধারণা কমিটির হাতে নিয়োগ আসলে টাকা খাওয়ার ফন্দি।নিয়োগ আরও তাড়াতাড়ি দিলে ভালো হত। নিয়োগ কমিটির হাতে চলে গেলে আরও দেরি হবে। নিবন্ধনের নিয়োগ কমিটিতে অওতায় দেয়ার কথা হচ্ছে। আর কমিটির হাতে নিয়োগ হলে কমিটিকে আমাদের টাকা দিতে হবে। আর কমিটির হাতে টাকার বিনিময়ে এ নিয়োগ ফেয়ার হবে না।

এছাড়া নিবন্ধেনের মৌখিকের অভিজ্ঞতা বর্ননা করে টাঙ্গাইলের সুজন মাহমুদ বলেন, “পোয়েট অফ নেচার ও পোয়েট অব বিউটি কে জিজ্ঞেসা করেছেন। আমার একাডেমিক জীবন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। পোয়েট অফ সুপার ন্যাচারালিজম সম্পর্কে বলতে বলেছেন।”

নারায়গঞ্জ থেকে আসা মারজিয়াতুন বিপাশা বলেন, “আমাকে নিজ পরিচয় ইংরেজিতে বলতে বলেছেন। আমার মাস্টার্সের টপিক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছেন। সাহিত্য থেকে রবার্ট ফ্রস্ট ও ওয়ার্ডসওয়ার্থ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।”

মাদারীপুর থেকে আসা আহসান জানান, “শিক্ষক হিসেবে আপনার কি কি গুণাবলী আছে তা বলতে বলেছেন। বি এম কলেজে পড়ালেখা করেছি তাই বিএম কলেজের গেটে লেখা একটি উক্তি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।”  

মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন,“গ্রামার থেকে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছে। এ ছাড়া ট্রান্সলেশন জিজ্ঞাসা করেছেন। কখন প্লেন ল্যান্ড করবে, ২টা বাজতে ২ মিনিট বাকি আছে, ডাক্তার আসার পূর্বেই রোগি মারা গেল এ তিনটি বাক্য ইংরেজিতে করতে বলেছেন।”  

সাতক্ষীরা থেকে স্কুল পর্যায়ে পরীক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন দৈনিক শিক্ষাকে জানান,“সাতক্ষীরার ইতিহাসে ঐতিহ্য নিয়ে ইংরেজিতে বলতে বলেছেন। সুন্দরবন নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। সাতক্ষীরা কেন বিখ্যাত তা ইংরেজিতে বলতে বলেছেন। ‘ইউসড টু’ এর ব্যবহার জানতে চেয়েছেন।”

নরসিংদী থেকে স্কুল পর্যায়ে পরীক্ষা দিতে আসা তানিয়া বেগম বলেন, “প্যারাগ্রাফ কি জিজ্ঞেসা করেছেন। টপিক সেন্টেস কি জানতে চেয়েছেন।”

চাঁদপুর থেকে আসা মোঃ আবু সায়েম মুন্সি জানান, “সাহিত্য থেকেই প্রশ্ন করা হয়েছে। পোয়েট অব বিউটি কে জানতে চেয়েছেন। হ্যামলেট প্রতিশোধ নেয়নি কেন জানতে চেয়েছেন।”

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ফারহানা আক্তার বলেন,“ গ্রামাটিক্যাল টার্মস সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। একটি বাক্য বলে তা ইংরেজিতে বলতে বলেছেন এবং বাক্যটিকে ইনটারোগেটিভ করতে বলেছেন।”  

মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান. “ আমার নাম ও নিজ জেলা সম্পর্কে ইরেজিতে বলতে বলেছেন। ইংরেজি প্রথমভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এমন পাঁচটি দেশের নাম বলতে বলেছেন। গ্রমার থেকে টেন্স সম্পর্ক বলতে বলেছেন। কিছু ট্রান্সলেশন করতে দিয়েছিলেন।”


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055499076843262