সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা প্যানেলে নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন। এদিকে প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ার আশায় লিখিত লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিরীহ প্রার্থীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে প্যানেলের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। একইসাথে প্যানেলে শিক্ষক নিয়োগের জন্য কাউকে টাকা না দিতে প্রার্থীদের পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসব তথ্য জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বেশ কিছুদিন ধরেই প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ প্রত্যাশী প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি সরকারের নজরেও এসেছে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে প্যানেল পদ্ধতি চায় অনুমিত হিসাব কমিটি
যদিও প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের আশায় টাকা লেনদেনের বিষয়ে জানতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নেতাদের সাথে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে একাধিকবার টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, কথিত স্বার্থান্বেষী নেতারা প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের লোভ দেখিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন। তারা করোনাকালেও বেশ কয়েকবার নিয়োগ প্রত্যাশীদের বিভিন্ন স্থানে একত্রিত করেছেন। এসময়ই তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া শুরু হয়েছে। একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রায় ৫ হাজার প্রার্থীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি মহল। এ পরিস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সতর্ক করল গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
২৫ আগস্ট সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল মাঠ পর্যায়ে তথাকথিত প্যানেল হতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের কথা বলে নিরীহ প্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন মাধ্যমে সরকারের গোচরীভূত হয়েছে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুলাই সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদন করার শেষ তারিখ ছিল সে বছর ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুন পর্যন্ত সকল শূন্য পদ বিবেচনা করে ১৮ হাজার ১৪৭টি পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কোনো প্যানেল করার বিষয় উল্লেখ ছিল না। ফলে, এ নিয়োগে কোনো প্যানেল বা অপেক্ষমান তালিকা করা হয়নি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ একটি রুটিন প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে পদ শূন্য হবে বিবেচনা করে প্যানেল করার কোনো সুযোগ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ প্রেক্ষাপটে প্যানেল হতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা হবে বলে বিভ্রান্ত হয়ে কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় কোনো প্রকার অর্থ লেনদেন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সরকারি বিধি বিধান অনুসারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এতে অর্থ লেনদেনের কোনো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে মতামত জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে ২৬ আগস্ট যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় প্যানেল বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসানের সাথে। কিন্তু একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।