বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। সুতরাং মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে চর্চা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা লক্ষ্য করি, দেশের গণমাধ্যম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের দাফতরিক কাজে নিয়মিত অশুদ্ধ বাংলা ভাষা ও বানান ব্যবহার করছে। এমনকি বিভিন্ন সড়কে যেসব বিজ্ঞাপনের সাইনবোর্ড ঝুলে থাকে সেখানেও বাংলা ভাষার অশুদ্ধ প্রয়োগ দেখা যায়। আমি মনে করি, মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে না লিখলে ভাষার অমর্যাদা করা হয়।
আইন প্রয়োগ করে মাতৃভাষার শুদ্ধ প্রয়োগ সম্ভব নয়। এজন্য পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। নিজের ভাষার শুদ্ধ চর্চা নিজের মর্যাদার মতো সম্মানের। বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ, বাংলা বানান অভিধান প্রণয়ন করেছে। এ অভিধান সবাইকে অনুসরণ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থীদের শুদ্ধ ভাষায় লেখার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে হবে।
এ ব্যাপারে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে পারে। দেশের গণমাধ্যমগুলো কাজে লাগিয়ে তারা বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলা একাডেমি একটি সেল তৈরি করতে পারে। তার কাজ হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতে ভাষা ব্যবহারের শুদ্ধতা নির্ণয়। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দান। এমনকি সড়কে সাঁটানো বিজ্ঞাপনের সাইনবোর্ডগুলোর ভাষার শুদ্ধতা নির্ণয়। ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নজরদারি করা। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ওই সেলের অনুমতি নিয়ে সড়কে সাইনবোর্ড টানাবে। সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিক উদ্যোগ নিলে দেশের বিভিন্ন স্থানে লাগানো বিজ্ঞাপনের সাইনবোর্ডগুলো মাতৃভাষায় লেখা ও তার শুদ্ধতা নির্ণয় সম্ভব। সরকারি-বেসরকারি সব দফতরে বাংলা একাডেমি প্রণীত বানানরীতি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। কোনোভাবেই মাতৃভাষার অমর্যাদা করা যাবে না।
লেখক : কথাশিল্পী
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন