‘সাতদিন থিকা পানির হাতে (সঙ্গে) লড়াই করছি। খাওনের পানি নাই, ঘরে চাল থাকলেও রান্না কইরা খাওনের জোঁ নাই। চরম কষ্ট আর দুর্ভোগের মদ্দে যহন আমগর মন্ত্রী সাব দেখপার আইল তাও আবার লুঙ্গি পইরা, মনটা ভরে গেল। আমগর মতো গরীব মাইনসের খোঁজখবর নিবার যহন মন্ত্রী এমপি চেয়ারম্যানরা আইসে তহন কষ্ট আর কষ্ট থাহে না।’
কথাগুলো বলছিলেন রাজীবপুরের নয়াচর মদনপাড়া বন্যাদুর্গত এলাকার দিনমজুর আলী আকবর। শনিবার এ এলাকায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন দুর্গতদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
গত ক’দিন ধরেই গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী লুঙ্গি পরেই বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ছুটেছেন এ চর থেকে ও চরে। খোঁজখবর নিয়েছেন বন্যা আক্রান্ত মানুষদের। হাতে তুলে দিয়েছেন বিশুদ্ধ পানির বোতল, চিনি, সয়াবিন তেল, মোম, শুকনো খাবার আর ত্রাণের চাল। একজন মন্ত্রী লুঙ্গি পরে এভাবে দুর্গতদের কাছে ছুটে যাবেন তা হয়তো কেউ ভাবেননি। লুঙ্গি পরে মন্ত্রীর ওই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে এরইমধ্যে এলাকায় প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ছে জনসাধারণের মাঝে।
কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা বন্যা আক্রান্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ দু’উপজেলা পরিষদ চত্বরে বন্যার পানি ঢোকে। প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এলাকার রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্যার পানিতে ডুবে, বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ও সাপের কামড়ে বন্যায় ৫ জনের মৃত্যুও ঘটেছে। পানি কমছে আর ক্ষতিগ্রস্ত ভয়াবহ চিত্র ভেসে উঠছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে ব্রাজিলে প্রীতি ফুটবল খেলেই চলে এসেছি আমার দুর্গত এলাকায়। এবারের বন্যায় আমার এলাকার ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। আমি নিজে দুর্গত এলাকায় ঘুরে তাদের খোঁজখবর নিয়েছি এবং দুর্গতদের হাতে সরকারের সাহায্য সহযোগিতা তুলে দিয়েছি।