শিক্ষামন্ত্রী ডা দীপু মনি বলেছেন, এই ডিজিটাল শিক্ষার যুগে, আমি বিশ্বাস করি যে বাচ্চাদের শেখার উপকরণগুলো সহজেই বোধগম্য এবং উপভোগ্য করে তৈরি করা দরকার। পড়াশোনা সবসময় পরীক্ষাকেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয়, বরং নীতিবান, দায়িত্বশীল এবং সংবেদনশীল মানুষ গড়তে যেসব শিক্ষা দরকার তার প্রয়োজনীয়তা অনেক, যেমনটা জাতির জনক স্বপ্ন দেখেছিলেন।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) এক অনলাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সভায় আরও যুক্ত ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর, এমপি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপ-উপাচার্য ড. নাসরিন আহমদ প্রমুখ।
স্টপ-মোশন এনিমেশন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ স্টপ-মোশন অ্যানিমেশনটি শিশুদের জন্য উপযোগী মাধ্যম, ভাষা এবং স্টাইল ব্যবহার করে সংবিধানের চারটি স্তম্ভকে তুলে ধরেছে। এনিমেশনটি বঙ্গবন্ধুর নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং তাঁর দর্শন গঠনের কাহিনী অনুসরণ করেছে। যেসব মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক আদর্শ যা বাংলাদেশের সংবিধানের ভিত্তি হিসাবে কাজ করে, এ এনিমেশন তরুণ প্রজন্মকে সেসব সম্পর্কে শিক্ষিত করে তুলবে। যুগোপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ এই প্রোডাকশনের জন্য সম্পৃক্ত দলটিকে সাধুবাদ জানান তিনি।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এই ঐতিহাসিক শোকের মাসে চার রঙের বাসার প্রযোজনাকে আমি সাধুবাদ জানাতে চাই, যেখানে খুবই সময়োপযোগী ও শিশু বান্ধব একটি এনিমেশনে সংবিধানের পেছনে বঙ্গবন্ধুর মৌলিক কাজগুলো দেখানো হয়েছে। এই স্টপ-মোশন এনিমেশনটি শুধু গল্পই বলেনি বরং শিশু হৃদয় উন্মোচন করবে এবং বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস জানার ব্যাপারে, নিজেদের গৌরবোজ্জ্বল জাতিগত পরিচয় উপলব্ধি করার ব্যাপারে আগ্রহী করবে।
তিনি আরও বলেন, শিশুদের উপযোগী রঙ্গীন রূপক এবং প্রতীক দিয়ে এনিমেশনটি তুলে ধরেছে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির চারটি মূলনীতি - গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম-নিরপেক্ষতা, এবং জাতীয়তাবাদ। যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান একটি ছোট মেয়েকে পাখির বাসা তৈরি শেখান, সাথে তিনি বলে যান সেসব পেছনের গল্প যা জাতির জন্য একটি কাঠামো পরিকল্পনায় তার নীতি-আদর্শকে প্রভাবিত করেছিল।
এদিকে, নতুন মিডিয়া সামগ্রী ব্যবহার করে শিশু এবং শিক্ষার্থীদের আমাদের দেশের সঠিক ইতিহাস শেখানোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, যদি আমরা আমাদের বাচ্চাদের উপভোগ্য, আকর্ষণীয় শিক্ষাসামগ্রী দিয়ে শিক্ষিত করতে পারি- তবে তারা স্বাভাবিকভাবেই সেই তথ্যটি গ্রহণ করবে। বাচ্চাদেরকে আমাদের জাতির সঠিক ইতিহাস শেখাতে হবে, জাতির জন্মের গল্পগুলো তাদের মধ্যে নিজেদের জাতিগত পরিচয় সম্পর্কে অনুভূতি তৈরি করবে যা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এমন এনিমেশন আমাদের জাতির পরিচয়, মূল্যবোধ এমনভাবে বাচ্চাদের সামনে তুলে ধরবে যা তারা উপভোগ করে শিখতে এবং সহজে মনে রাখতে পারবে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক জেরিন মাহমুদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সরকার, স্টার্ট আপ বাংলাদেশ এবং আইসিটি বিভাগের সমর্থনে আমরা শিশু-বান্ধব ও শিক্ষামূলক এই এনিমেশনটি তৈরি করতে পেরে এবং শোকের মাসটি স্মরণীয় করে রাখতে পেরে গর্বিত! শিশুদের শিক্ষার পদ্ধতিকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করে আমরা হারস্টোরি এবং চল পড়ি কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবার ব্যাপারে আশাবাদী।
এছাড়া সাইকিয়া এস চৌধুরী এবং অ্যানিমেটর অমিত আশরাফ স্টপ-মোশন এনিমেশন তৈরির অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। স্টার্টআপ বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরামর্শদাতা টিনা এফ জাবিন ডিজিটাল বিষয়বস্তুর গুরুত্বের উপর জোর দেন এবং বাচ্চাদের জন্য একটি শেখার পোর্টাল তৈরির বিষয়ে তার চিন্তাভাবনাগুলো জানান, যাতে আমাদের জাতির ইতিহাস সম্পর্কিত উন্নতমানের শিক্ষা-সামগ্রী থাকতে পারে এবং অন্যান্য শিক্ষার বিষয়াবলীসহ বাংলাদেশের জন্ম নিয়ে অসাধারণ গল্পগুলো শিশুদের সহজে শেখানো যায়।